সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে ফজলুর রহমানের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এরপর তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার পৌর এলাকার নগরপাড়ায় স্কুলটির অবস্থান। এই স্কুলে তিনি ১৫-০৪-১৯৯৮ সালে ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং ইন্সট্রাক্টর পদে নিয়োগ পান। যার ইনডেক্স-INS-800741
এরপর তিনি ড্রেস মেকিং এন্ড টেলারিং পদ থেকে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সহকারী প্রধানশিক্ষক পদে নিয়োগ নেন ২১-০৭-২০১৪ সালে, যা সম্পূর্ণ নীতি বহির্ভূত। ২০১০ সালের ২৪-০৩ ২০১৩ ইং সংশোধিত নীতিমালার ১১ নং অনুচ্ছেদের ২৩ নং ক্রমিক অনুযায়ী ড্রেস মেকিং এন্ড টেলারিং পদের কোন শিক্ষক প্রশাসনিক কোন পদে আসতে পারবে না।
কিন্তু সে সহকারী শিক্ষক বাংলা হিসাবে প্রত্যয়ন জাল করে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদটি বাগিয়ে নেন। আর এখানেই তিনি থেমে থাকেননি পরবর্তীতে তিনি ১০-০৫-২০২২ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুলেই যোগদান করেন। যা তার কাম্য অভিজ্ঞতার নিয়মে আসেনা। মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালক ১১-১২-২০২২ ইং তারিখের এক চিঠিতে কাম্য অভিজ্ঞতা পূর্ণ না হওয়ায় তার এমপিও আবেদন বাতিল করেন। তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পরেও সহকারি প্রধানের সরকারী বেতন নিয়মিতভাবে উত্তোলন করে আসছেন। ২০২১ সালের ১১.১৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যা নীতিমালার পরিপন্থী। এছাড়াও তিনি স্কুলের অভ্যন্তরীণ আয় থেকে বেতনের ৩০% করে প্রতি মাসে বেতন হিসেবে উত্তোলন করছেন।
বিগত দিনে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় তিনি অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিদের দীর্ঘদিন জিম্মি করে রাখেন, এতো অনিয়মের পরেও ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেন না। বর্তমানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে তিনি রূপ পরিবর্তন
করে স্থানীয় দলের নেতাদের সাথে আতাত করে নতুন বুদ্ধি আটছেন।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক হতে আমার মাউশির বিধি অনুযায়ী কোন বাধা নেই এবং আমার কাগজপত্র সঠিক আছে মন্ত্রণালয় কি জন্য আমার বেতন দিচ্ছে না সে বিষয়টি আমি হাইকোর্টে রিট করেছি। কিন্তু আমি মামলার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম গত ২৮-০৫-২০২৪ ইং তারিখে তার রিট পিটিশনটি রিজেক্ট হয়ে গেছে।
সাবেক প্রধান শিক্ষক জনাব মো: শামসুল আলম জানান, ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ফজলুর রহমানের সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করার যোগ্যতা ছিল না তারপরেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সহকারী প্রধানের পদটি বাগিয়ে নিয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুলতান আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আমার সময়ে হয়নি, আমি নীতিমালা দেখে আপনাকে বিস্তারিত জানাতে পারবো নিয়োগ বৈধ আছে কিনা।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আজাহারুল ইসলাম জানান, ট্রেড ইন্সট্রাক্টর পদের কোন শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষক হওয়ার কোন সুযোগ নেই এবং পদত্যাগ করার পরে ওই পদের বেতন উত্তোলন করারও কোন সুযোগ নেই। তবে এই বিষয়টি আমি বিডি মহোদয়ের সাথে ডিসকাস করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি স্নিগ্ধা দাস বলেন, কোন পদ থেকে পদত্যাগ করার পরে উক্ত পদের বেতন উত্তোলন করা যায় না। ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদ থেকে সহকারি প্রধান শিক্ষক হওয়ার বিষয়ে শিক্ষা অফিসার ভালো বলতে পারবে।
যদি এমনটি কেউ করে থাকে এবং আমার কাছে অভিযোগ আসে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।