সুতরাং কুরআন সুন্নাহর আলোকে বোঝা যায় ঐতিহাসিকভাবেই ইসলাম অমুসলিমদের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। অন্যের উপাসনালয় ভেঙে ফেলার অনুমতি ইসলাম দেয়নি। মসজিদ, মন্দির বা গির্জায় হামলা করা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়। ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রা.)-এর শাসনের আগে খ্রিস্টানদের একটি গির্জা ভেঙে মুসলমানরা মসজিদ বানিয়েছিল।ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রা.) খেলাফত গ্রহণের পর খ্রিস্টানরা এ অভিযোগ নিয়ে খলিফার দরবারে গেলে তৎক্ষণাৎ এক ফরমান পাঠিয়ে খ্রিস্টানদের গির্জা যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবে তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.) হিরা নামের স্থানের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিরাপত্তাসংক্রান্ত যে চুক্তি করেছিলেন, তাতে উল্লেখ রয়েছে, ‘তাদের গির্জা তথা ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস করা যাবে না এবং তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া যাবে না। ঘণ্টা বাজানো থেকে তাদের নিষেধ করা যাবে না। ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের সময় ধর্মীয় প্রতীক ক্রুশ বের করাতে বাধা দেওয়া যাবে না। ’ (ফাতাওয়া হক্কানিয়া : ৫/৪৮৫)
ওমর (রা.) বায়তুল মুকাদ্দাসের খ্রিস্টানদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
তাতে উল্লেখ ছিল, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। এটি একটি নিরাপত্তাসংক্রান্ত চুক্তিনামা, যা মুসলমানদের আমির, আল্লাহর বান্দা ওমরের পক্ষ থেকে স্বাক্ষরিত হলো, এ চুক্তিনামা ইলিয়াবাসী তথা জেরুজালেমে বসবাসরত খ্রিস্টানদের জানমাল, গির্জা-ক্রুশ, সুস্থ-অসুস্থ তথা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর তাদের উপাসনালয়ে অন্য কেউ অবস্থান করতে পারবে না। তাদের গির্জা ধ্বংস করা যাবে না। কোনো ধরনের ক্ষতিসাধন করা যাবে না। তাদের নিয়ন্ত্রিত কোনো বস্তু, তাদের ধর্মীয় প্রতীক ক্রুশ ও তাদের সম্পদের কোনো ধরনের ক্ষতিসাধন বা হামলা করা যাবে না। ’ (তারিখুর রাসুল ওয়াল মুলুক, তারিখে তাবারি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৪৯) আল্লাহ তায়ালা সকলকে বোঝার তাওফীক দান করুন,আমীন। সহকারী প্রধান শিক্ষক পশ্চিম বানিয়াখামার দারুল কুরআন বহুমুখী মাদ্রাসা,খতীব, বায়তুল আমান জামে মসজিদ,চকমাথুরাবাদ,পিপড়ামারী, হরিণটানা, খুলনা।