প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ৮, ২০২৫, ৪:৩০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ৯:৩৭ এ.এম
প্রকৃতি যেন বেঁকে বসেছে, ফের পানিবন্দি তালার তেঁতুলিয়ার ১৭ গ্রাম
বি এম বাবলুর রহমান, তালা-সাতক্ষীরা : প্রকৃতি যেন বেঁকে বসেছে দ্বিতীয় দফা বৃষ্টিতে ফের পানি বন্দি তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রাম, জলাবদ্ধতা নিরসন কল্পে যৌক্তিক সমাধানে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার ১৮ অক্টোবর তালা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রাম কয়েক মাস পানিবন্দি বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি অবস্থায় আছে ৩ হাজার পরিবার। কৃষকদের ফসল পাঁচে গলে পানিতে মিশে গেছে। অবশিষ্ট নেই মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। পানিবন্দি এলাকায় বিষধর সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি। সাপের ভয়ে আতংকিত সাধারণ মানুষ।
টানা বর্ষণের ফলে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।পাঁচরখি মদনপুর,শিরাশুনী,লাউতাড়া,শুভাশুনী এলাকার। চলতি মাসের প্রথম দিকে কিছু টা আশার আলোর দেখলেও গত তিন দিনের ধারাবাহিক বর্ষণে পুনরাবৃত্তি হয়েছে পানিবন্দি। গ্রামগুলোর উঠানে বানি উঠেছে। সকল আমন ধান,ও সবজি আগেই নষ্ট হয়ে গেছে।জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এখনো আছে। ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুৎ মিটার এখনো সংস্কারের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে না। দ্বিতীয় দফা বৃষ্টিতে মানুষের জীবন খুব সংকট ময় পরিস্থিতিতে।
কয়েক দফায় বৃষ্টিতে প্রায় দেড় হাজার হাজার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে ৫-৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক ঘের মালিক। ইউনিয়ন এবার বৃষ্টি জুড়ে প্রায় শতাধিক পোল্ট্রি খামার পানিতে তলিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা ।
অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে।সার্বিক পরিস্থিতিতে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। স্যানেটারি অবস্থা আরো খারাপ , চর্ম রোগ, পানিবাহিত রোগ, ডায়রিয়া জনিত রোগে বেড়ে গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিক এ নেই পানিবাহিত রোগের ঔষধ নেই। সার্বিক পরিস্থিতিতে শোচনীয় অবস্থা এই জনপদের মানুষ।
কয়েক দফা টানা বর্ষণের মাস খানেক পানিবন্দীরা জানান আমরা ত্রান চাই না আমারা চাই পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা। পাচরোখি গ্রামে প্রকাশ দাশ, আলাউদ্দিন গাজী, মদনপুর গ্রামের, আব্দুল খালেক,শিরাশুনী,শামিমা আক্তার,আসমা বেগম, আলমগীর হোসেন,আছিয়া বেগম জানান তাঁরা পানিবন্দি থেকে মুক্তি চাই। আশু ও স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
টানা বৃষ্টিতে এমন পরিস্থিতির মুখ্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান পানি নিষ্কাশনের জন্য সাধারণত যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ভদ্রা নদী দিয়ে পানি সরবরাহ করতো, বর্তমানে ঐ এলাকার নননিয়া সুইস গেট দিয়ে পানি সরতে পলিমাটি অপসারণ চলছে। তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মোঃ রাসেল জানান তিনি তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন শেষে পানি নিষ্কাশনের জন্য যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন এবং নননিয়া সুইস গেটর জমাকৃত পলি মাটি অপসারণের কাজ চলছে। বিকল্প হিসেবে তালা সদরের দধিসারা বিল দিয়ে পানি সরবরাহের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। তবে এটি যৌক্তিক সমাধান নয়,পানিউন্নয়ন বোর্ড থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে যৌক্তিক সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত