1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

কালীগঞ্জে কেঁচো আর কম্পোস্ট সারের উদ্যেক্ত সবাই নারী

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাপনা গ্রাম এখন কেঁচো আর কম্পোস্ট সারের গ্রামে পরিণত হয়েছে। শতভাগ বাড়িতে এখন সার উৎপাদন হচ্ছে। গ্রামের ৬০ ঘর পরিবার এখন আর রাসায়নিক সার ব্যবহার করে না। নিজেদের উৎপাদিত পরিবেশ বান্ধন কম্পোস্ট সার দিয়েই জমিতে চাষাবাদ করছে। মাসে তারা ৫০ হাজার টাকার সার ও কেচো উৎপাদন করছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এখানকার কম্পোস্ট সার সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে। আর এই কাজটি যারা করছে তারা সবাই গৃহিনী। বাড়ির প্রয়োজনীয় কাজের শেষে তারা বাড়তি কাজ হিসেবে এই কাজটি করছে। এই কাজে তাদের সহযোগীতা করেছেন জাপান ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড ও উপজেলা কৃষি অফিস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পূর্বের গ্রাম দাপনা। এই গ্রামের নারীরা খুবই কর্মট। প্রত্যেকের বাড়িতেই ২ থেকে ৮টি পর্যন্ত গরু আছে। তারা তাদের গরুর গোবর কাজে লাগিয়ে সার তৈরি করছে। যে সার পরিবেশ বান্ধব। এই গ্রামে শতভাগ বাড়িতে কম্পোস্ট প্লান্ট বানাতে পরামর্শ সহযোগীতা দিয়ে সহযোগীতা করেছেন রেবেকা ও সোনাভান নামের দুই গৃহবধু। তারা প্রথম পর্যায়ে হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগীতায় এই কাজ শুরু করেন। এর পর সারা গ্রাম। রেবেকার ঘরের মধ্যে, রান্নাঘরে, বারান্দায়, গোয়ালঘরে, বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় কাচা, পাকা বেশ কয়েকটি কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরি করেছেন। প্রতি মাসে তিনি প্রায় ৪০০ কেজি কম্পোস্ট ও প্রায় ১০ কেজি কেচো উৎপাদন করছে। এক কেজি কম্পোস্ট সার ১০ টাকা আর এক কেজি কেচো ১৫ শ” থেকে-১৮শ টাকা দামে বিক্রি করছেন।
একই গ্রামের কৃষানী আতিয়ারের স্ত্রী শাহনাজ, মশিয়ারের স্ত্রী সোনাভান, শওকতের স্ত্রী সুখজান, কুদ্দুসের স্ত্রী হাজেরা বেগম, জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আহরনসহ ৬০টি পরিবারের সকল গৃহিনীরা তাদের বাড়িতে কেউ মাটির রিং স্লাব, কেউ বা পাকা করে কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরি করেছে। প্রতি মাসেই তাদের প্লান্ট থেকে সার উৎপাদন হচ্ছে। তারা উৎপাদিত কম্পোস্ট সার নিজেদের জমিতে ব্যবহার করে বাকিটুকু বিক্রি করছে। দেশের যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ট্রাক ভরে সার ও কেচো ক্রয় করে নিয়ে গিয়ে পরে সেগুলো প্যাকেটিং করে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই,সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশে বিক্রি করছে। কেচো কম্পোস্ট সার বিশেষ করে ধান, পান চাষী, সবজী জাতীয় চাষাবাদে বেশি উপকার পাচ্ছে।
কৃষানী সোনাভান জানান, আমি এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার সার ও ১০ হাজার টাকার কেচো বিক্রি করেছি। কেচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করতে বেশি টাকা খরচ হয় না। দরকার আগ্রহ। গরুর গোবর, লতাপাতা,কলাগাছ আর কেচো এই দিয়েই প্রতি তিন মাস অন্তর সার উৎপাদন করা হয়। এই সারের গুনগত মানও ভাল। যশোর মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্রে তারা এ জৈব সার পরীক্ষা করে দেখেছেন বাজারের যে সব টিএসপি পাওয়া যায় তার মান ৪৫% অন্যদিকে কম্পোস্ট সার বা অর্গানিক সারের মান ৮৫%।
শুধু তাই না এই গ্রামের কৃষাণীরা সবাই মিলে একটি মহিলা সমবায় সমিতি করেছেণ। সার বিক্রির একটি অংশ তারা সমবায় সমিতিতে জমা রাখেন। এই সমিতির বর্তমান মুল ধন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। তারা ইতিমধ্যে সমিতির মাধ্যমে একটি পাওয়ার ট্রিলার, ২টি গরু ক্রয় করেছে। আর নগদ টাকা সমিতির সদস্যদের মধ্যে ঋণ দিয়েছেন। শুধু তাই নয় গ্রামের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের তারা লেখা পাড়ায় বিভিন্ন সময় সহযোগীতা করেন। নিয়ামতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজেদুল হক লিটন মানবকন্ঠকে জানান, দাপনা গ্রামের নারীরা যে উদ্যোগ গ্রহন করেছে তাতে খুব শ্রীঘ্রই এই গ্রামে দারুন পরিবর্তন আসবে। আমি দারুন খুশি আমার ইউনিয়নের একটি গ্রামের নারীরা এতদুর এগিয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, কম্পোস্ট সার পরিবেশ বান্ধব। এই সার জমিতে পরিমানে বেশি লাগে তবে ফসল ভাল হয়। এই গ্রামের কৃষানীরা যে নিজেদের উৎপাদিত সার জমিতে ব্যবহার করছে এটা ভাল উদ্যোগ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট