ডেস্ক নিউজ : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ঢাকায় এসেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৮০ জন শিক্ষার্থী।
রোববার দুপুর ২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তারা অবস্থান করেন। এ সময় শহীদ মিনারে ব্যাপক পুলিশ প্রটোকল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। ঢাকায় অবস্থানরত কুয়েটের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনে এক শিক্ষার্থী বলেন, কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে আর্মি ক্যাম্প মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্ব। সংঘর্ষের দিনে আর্মি আসতে ৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিল। এর ফলে রক্তাক্ত হয়েছে আমাদের অনেক ভাই। আহত অনেকে ঢাকায় ভর্তি রয়েছেন। মাথায় ২৬ টা সেলাই দেওয়া হয়েছে, এমন অবস্থায় আছে। কারও হাত ভেঙে তিন ভাগ হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হাত কেটে ফেলতে হবে। এই অবস্থায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি যখন আমরা ভিসি স্যারের কাছে গিয়ে বলি- আপনি স্বীকার করেন, আজকের এই ঘটনা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। ছাত্রদেরও রক্ষা করতে পারতেন। যেহেতু আপনি পারেননি এর দায়ভার আপনার। জবাবে ভিসি বলেন, আমি ব্যর্থ হইনি। আমার দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে।
তারা বলেন, কুয়েটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর একজন মানুষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে পারেনি। ক্যাম্পাসে ঢুকে বহিরাগত ছাত্রদল ও যুবদল সন্ত্রাসীরা আমাদের কুপিয়েছে। সেনা সদস্যরা জানিয়েছেন ক্যাম্পাসে ঢুকতে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাহলে এর দায় কে নেবে। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি নেয়ে প্রশাসনের কাছে উপস্থিত হয়। এই ৬ দফার প্রথম ৫ দফা ছিল- কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, কেউ ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হলে তাকে বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব করতে হবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যারা আহত হয়েছেন তাদের আর্থিক সহায়তা করতে হবে এবং কুয়েট প্রশাসনকে স্বীকার করতে হবে ছাত্রদল কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়া এ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে ও মামলা দিতে হবে। এ ৫টি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু বিন্দু পরিমাণ মেনে নেওয়া হয়নি। আর ৬ নম্বর দাবি ছিল কুয়েট ভিসি ও প্রো ভিসিকে পদত্যাগ করতে হবে।
তারা আরও বলেন, আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি ও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য ওনার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাই। যেন তিনি দ্রুত কুয়েটে ক্যাম্পাসকে নিরাপদ অবস্থান করে দেবেন যেন আমরা পড়াশোনা করতে পারি।
এর আগে রোববার সকালে ক্যাম্পাস থেকে ভাড়া করা দুটি বাসে তারা রওনা হন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে মাথায় ও চোখে লাল কাপড় পরা শিক্ষার্থীরা বলেন, এই ক্যাম্পাস তাদের জন্য নিরাপদ নয়। তারা এখানে নিরাপদ বোধ করছেন না। ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তারা তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে যাবেন। উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যের অপসারণসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না পর্যন্ত তারা আর ক্যাম্পাসে ফিরে আসবেন না।