কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: “আমি কুল হারায় এক বিবাগী, আমারে কেউ ছুইয়ো না গো সজনী” নাম পরিচয় জানা নেই রাস্তার ধারেই বসবাস জীবনের পড়ন্ত বিকেলে ৮ বছর এভাবেই কাটে তার জীবন সংসার। কারো কাছে হাত পাতেনা স্বেচ্ছায় যদি কেউ কিছু দেয় পছন্দ হলে নেয়, না হলে নেয়না। মুখের ভাষাও কেউ বুঝতে পারে না কোন ভাষায় কথা বলে সেটাও জানা নেই।
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের মসজিদের পাশে পলিথিনের ঝুপড়ী ঘরে বসবাস করে এই ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মহিলা।
২০১৬ সালের শেষের দিকে কোথা থেকে এই মহিলা এখানে এসেছেন কেউ বলতে পারেনা। কোন একদিন দেখলেন একজন মহিলা মসজিদের পাশে কাদিরপুর গ্রামের খোকসা জানিপুর সড়কের পাশে বসে আছে। সেই থেকেই স্থানীয় সাধারণ মানুষের সাহায্য সহযোগিতা ও খাদ্য আহারের ব্যবস্থায় দীর্ঘ আট বছর বসবাস করছেন পলিথিনে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে প্রায় সময় তাকে বিভিন্ন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করা হয়। উপজেলা পিআইও অফিস থেকে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকেও শীতবস্ত্র, খাদ্যবস্তু ও বিভিন্ন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। সবচেয়ে বেশি স্থানীয় কাদিরপুরের উপরে সাধারণ মানুষ এবং এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে বিভিন্ন পেশাদার মানুষগণ। এরকম একজন বৃদ্ধ মহিলার জীবনযাপন এবং তার সড়কের পাশেই বসবাস বর্তমান সভ্য সমাজের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ রয়ে গেল।
সরকারের উদাসীনতা দেখিয়ে স্থানীয় একজন ব্যক্তির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, অনেক লোকেরই আবাসন প্রকল্পে ঘর জায়গা হলো কিন্তু এই বৃদ্ধা মহিলার জন্য রাস্তার পাশেও দুইটা টিনের ব্যবস্থা কেউ করে দিল না।
ঝড় ঝান্টা রোদ-বৃষ্টি সবই যেন ওই পলিথিনের ঝুট্টি ঘরে সত্তর বছর বয়সী মহিলার জীবনযাপন।
কে পাশে দাঁড়াবে, আর কে বা সত্য বসন বলবে, সেটাই এখন প্রশ্ন। তবে স্থানীয় মানুষের বদান্যতা ও তাদের দানের কারণেই এখান থেকে যেতে রাজি নয় বাক প্রতিবন্ধী এই বৃদ্ধ মহিলা। নিজ হাতেই সবকিছু জোগাড় পড়ে রান্নাবান্না করেই নিজে খাওয়া দাওয়া করেন। তার রান্না করা খাবার যদি কেউ খেতে চায় তাদেরকেও আপ্যায়ন করতে দ্বিধাবোধ করেন নাই এই বৃদ্ধ মহিলা। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো কারো কাছে চেয়ে হাত পেতে কোন কিছু চান না। স্বেচ্ছায় যদি কেউ কিছু দেয় তবে তার মন মতো হলে সে নেয়, না হলে সে নেয় না। নাম না জানা অজানা সত্তর বছর বয়সী এই বৃদ্ধ মহিলার নাই কোন অভিযোগ। নাই কোন মান অভিমান। সাধারণ মানুষের দানের বদলেতে জীবনের ৮টি বছর রাস্তার ধারে এভাবে পার করলেন। প্রশ্ন হল মানবতা কোথায় মানবিকতা কোথায় আমরাও তো মানুষ তাহলে কেন এই বৃদ্ধ মহিলা রাস্তার ধারে এসে বসবাস করে?
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিলে আমরা এই মহিলাটির জন্য ভাতার ব্যবস্থা করতে পারব । তা না হলে আমাদের অফিসিয়াল ভাবে কিছু করা সম্ভব হবে না।