ডেস্ক রিপোর্ট : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অবৈধ বিদেশিদের তাড়াতে আদাজল খেয়ে নেমেছে। এ ক্ষেত্রে তারা আদলেতের রায়ও মানছে না।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২৩৮ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে বিতাড়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভেনেজুয়েলার এসব নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে এবং তাদেরকে এল সালভাদরের একটি কারাগারে নির্বাসিত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ২ শতাধিক ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরের একটি সুপারম্যাক্স কারাগারে নির্বাসিত করা হয়েছে। যদিও একজন মার্কিন বিচারক তাদের বিতাড়নের বিষয়টি আটকে দিয়েছিলেন।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, রোববার (১৬ মার্চ) সকালে আন্তর্জাতিক এমএস-১৩ গ্যাংয়ের ২৩ সদস্যের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার গ্যাং ট্রেন ডি আরাগুয়ার ২৩৮ সদস্য মধ্য আমেরিকার ওই দেশটিতে পৌঁছেছেন।
মার্কিন সরকার বা এল সালভাদর কেউই আটককৃতদের পরিচয় শনাক্ত করেনি। এছাড়া তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা গ্যাং সদস্যপদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও দেয়নি।
বিবিসি বলছে, একজন ফেডারেল বিচারকের আদেশ ট্রাম্প প্রশাসনকে এই ধরনের নির্বাসনকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য শতাব্দী প্রাচীন যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগ করতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু বিতাড়িতদের বহনকারী বিমানগুলো ইতোমধ্যেই রওনা হয়ে যায়।
বিচারকের রায়ের দিকে মজা করে প্রেসিডেন্ট বুকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, 'উফ... অনেক দেরি হয়ে গেছে'। তার একটি পোস্টের সঙ্গে সংযুক্ত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাত-পা বেঁধে রাখা লোকদের লাইনে করে সশস্ত্র কর্মকর্তারা বিমান থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিত্র বুকেলে লিখেছেন, আটককৃতদের তাৎক্ষণিকভাবে এল সালভাদরের কুখ্যাত মেগা-জেল টেরোরিজম কনফাইনমেন্ট স্টোরে (সেকোট) স্থানান্তর করা হয়েছে।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তাদের “এক বছরের জন্য” সেখানে রাখা হবে এবং এটি “নবায়নযোগ্য” হতে পারে।
এর আগে গত শনিবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে— ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাং আমেরিকার বিরুদ্ধে 'অনিয়মিত যুদ্ধ পরিচালনা করছে' এবং তিনি ১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্টের অধীনে এর সদস্যদের নির্বাসন দেবেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির মার্কিন জেলাজজ জেমস বোসবার্গ ট্রাম্পের ঘোষণার আওতাধীন নির্বাসন ১৪ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। মূলত আরও আইনি যুক্তি উপস্থাপনের জন্য সেই নির্দেশনা দেন তিনি।
নির্বাসিতদের নিয়ে বিমানগুলো ইতোমধ্যেই উড্ডয়ন করেছে বলে আইনজীবীরা তাকে জানানোর পর বিচারক বোসবার্গ ফ্লাইটগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন বলে মার্কিন মিডিয়া জানিয়েছে, যদিও সেই নির্দেশ তার লিখিত রায়ের অংশ ছিল না।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে মামলার নথিতে লিখিত নোটিশটি প্রকাশিত হয়েছে, যদিও অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের বহনকারী বিমানগুলো কখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা হয়েছিল কি-না তা স্পষ্ট নয়।
এরপর রোববার আদালতে বিচার বিভাগের আইনজীবীরা বলেছেন, আদালতের সেই আদেশটি প্রয়োগ করা হয়নি কারণ বিতাড়িতদের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রশাসন আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেনি। এছাড়া মার্কিন বিচার বিভাগও ওই বিচারকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।