সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলবর্তী কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদী বেষ্টিত দ্বীপভূমি গাবুরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগই গাবুরা ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নিত্য সঙ্গী। ২০০৭ সালে সিডোর, ২০০৯ সালে আইলা, পরবর্তীতে আমফান সহ বেশ কিছু ঘুর্ণিঝড় এলোমেলো করে দিয়েছে গাবুরার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে। তাই নিজেদের অস্তিত্বরক্ষায় ইউনিয়নবাসী বরাবরই ত্রাণের পরিবর্তে স্থায়ী টেকসই বেড়িবাঁধ দাবি করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি গাবুরার ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন উন্নয়নের মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ শুরু করেছ সরকার। স্মার্ট বাংলাদেশের মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গাবুরা ইউনিয়নকে সরকার এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন।
কাজের সুবিধার্থে ইউনিয়নের ৯ নং সোরা, চাঁদনীমুখা, হরিশখালি ডুমুরিয়া সহ বেশ কিছু এলাকার বেড়িবাঁধের ধারে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যথায় সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যারা অসহায় ভূমিহীন তাদের পূনরবাসন না করে ও যারা জমির মালিক তাদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙাসহ মেগা প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় এক হাজারের বেশী পরিবার আশ্রয়হীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
২সরজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, গাবুরা ৯ নং সোরা চাঁদনী মুখা এলাকার মানুষের হাহাকার। তাদের অভিযোগ, তারা বেড়িবাঁধের কোলে ঘর বেঁধে সারা জীবন বসত করে আসছেন। তাদের বাপ দাদাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নদী ভাঙনে চলে যাওয়ায় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন নদী ভরাটি চরে তারা বছরের পর বছর বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ায় অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ না থাকায় আজ তার গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
৯নং সোরা গ্রামের ইয়াকুব শেখ বলেন, বাপ দাদার আমল থেকে বাস করে আসলেও শুধুমাত্র এক নোটিশে ঘর ভেঙে নিতে হচ্ছে। তারা এখন কোথায় যাবন তা জানা নেই। কোন নিজস্ব জমি না থাকায় সরকারের কাছে তাদের বসবাসের জন্য ৯ নং সোরার চরে একটা গুচ্ছো গ্রাম করে দেবার আহবান জানান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম বলেন, গাবুরাবাসী আইলার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই বেড়িবাঁধের কারনে।
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ৯নং সোরা নদীর চরে হাজার হাজার বিঘা জমি পড়ে আছে সরকার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি গাবুরা ইউনিয়নের মানুষের কথা মাথায় রেখে একটি গুচ্ছগ্রাম তৈরি করে দিত, তাহলে এই মানুষগুলো হয়তো মাথা গোজার ঠাঁই খুজে পেত। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহীপুর কৌশলী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন যে সমস্ত ব্যক্তিরা মেগা প্রকল্পে বাস্তবভিটা বাস্তু জমি হারাচ্ছেন আমরা তাদের তালিকা তৈরি করে এবং প্রাথমিক একটা ক্ষতির পরিমাণ তৈরি করে মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছি অবশ্যই যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন তবে সরকারের টাকা আসতে একটু বিলম্ব হয় সে কারণে অনেক মানুষ বাস্তহারা জমিহারা হয়ে হতাশা ভোগ করছেন হতাশা ভোগকারার কোন কারণ নেই সরকার অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিবে , তিনি আরো বলেন আমি এলাকাবাসীকে অনুরোধ করব আপনারা ঠিকাদারদের কাজকাম ঠিকমতো দেখবেন এবং সকল কাজের সহায়তা করবেন, তাছাড়া তিনি আরো বলেন যে সমস্ত ব্যক্তিরা রাস্তার উপরে বাস করতেন তাদের ক্ষেত্রে আমাদের বলার কিছু নেই কারণ বাঁধের উপরে বসবাস করা এটা সম্পূর্ণ অবৈধ এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একটি চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি মনে করেন