1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

সাতক্ষীরায় আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, বাড়তে পারে রপ্তানি

  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

তালা : শীতের বিদায় ঘণ্টা বাজতেই সাতক্ষীরার আমবাগান জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মোহময় সুগন্ধ। গাছের ডালে ঝুলে থাকা অসংখ্য মুকুল জানান দিচ্ছে, আর কিছুদিন পরেই আসছে রসালো আমের মৌসুম। দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী অঞ্চল সাতক্ষীরায় এবারের বাগানগুলো সোনালি মুকুলে ছেয়ে গেছে। জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এবার ৪ হাজার ১৩৫ একর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন।
সাতক্ষীরার আমচাষিরা বছরের এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন। ফাল্গুনের হালকা বাতাস আর উষ্ণ রোদ আমের মুকুল ফোটার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। স্থানীয় চাষিদের মতে, এবছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মুকুলের পরিমাণ আশানুরূপ হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা, কলারোয়া, আশাশুনি ও তালা উপজেলায় প্রচুর আমবাগান রয়েছে। এখানকার প্রধান আমের জাতগুলোর মধ্যে গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি উল্লেখযোগ্য।
সাতক্ষীরার আম শুধু দেশের বাজারেই নয়, বিদেশেও ব্যাপক চাহিদা অর্জন করেছে। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরার আম ইউরোপের বাজারে রপ্তানি করা হয়। এরপর থেকে যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশে এখানকার আম রপ্তানি হচ্ছে।
জেলার আম চাষি জাকির হোসেন জানান, গত বছর আবহাওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছিল, তবে এবার প্রচুর মুকুল এসেছে। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরার আম স্বাদ ও গুণগত মানে অনন্য। এবারের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূল ছিল, কারণ মুকুলের সময় অতিরিক্ত কুয়াশা ছিল না। ফলে আমের ফলন ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জেলায় নিবন্ধিত চাষির সংখ্যা ৩৫১ জন, যাদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। আমের মুকুল আসার সময় এবং মটরদানার মতো হলে ইমিডাক্লোরোপিড গ্রুপের একটি কীটনাশক ও ম্যানকোজেব গ্রুপের একটি ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া, পাউডারের মতো সাদা দাগ পড়লে ‘মিলকিউ’ নামক ওষুধ প্রয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষকেরা এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন। ফলে আমের গুণগত মান উন্নত হচ্ছে এবং রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন বাড়ছে। আমরা আশা করছি, এবছর ইউরোপে সাতক্ষীরার আম রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়বে। আম রপ্তানিতে যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়ে গেছে। আবহাওয়া পরিবর্তন, কীটনাশকের যথাযথ ব্যবহার, সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নতকরণ ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে। উন্নত প্রশিক্ষণ, রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে সাতক্ষীরার আমকে আরও বেশি আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাতক্ষীরার আমবাগানে এখন যে সোনালি মুকুলের বাহার, তা শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং কৃষকের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতীক। এই মুকুল ধরে আমে পরিণত হলে, সেই আম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজারেও জায়গা করে নেবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট