1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৭:০২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

এই দিয়ে ৪৭টা ঈদ করতে পারিনি মামা

  • প্রকাশিত: রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫
আলকামা রমিন : সন্ধ্যার পরও চলছে টহল। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা প্রহরীর মুখে চাপা দীর্ঘশ্বাস। তাঁর কণ্ঠে ক্লান্তির চেয়েও বেশি কিছু—একটা চাপা অভিমান। “সাড়ে তেইশ বছর ধরে এই চাকরি করছি। একটা ঈদও পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারিনি। ঈদের দিনও ক্যাম্পাস পাহারা দিতে হয়। এখন আর বাড়ি থেকে আর কলও আসে না।”
বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন প্রহরীরা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান কাজ। তবে এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বছরের পর বছর পরিবার থেকে দূরে থেকে ঈদ করতে হয় তাঁদের। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার রোল (চুক্তি ভিত্তিক) এবং আউটসোর্সিং (কোম্পানির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য) এর অনেকে ২০-৩০ বছর ধরে এই চাকরিতে আছেন, কিন্তু ঈদে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পায়না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিরাপত্তা কর্মীদের ৮৮ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং ০৭ জনের আনসার সদস্যদের দল আউটসোর্সিংয়ে এবং ১০ জন মাস্টাররোলে (চুক্তি ভিত্তিক) দায়িত্ব পালন করছেন। মাস্টাররোলের মধ্যে চোক ভাতায় ০৩ জন আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৫ জন নিরাপত্তা প্রহরীর মধ্যে
ঈদের ছুটি পেয়েছেন মাত্র ১৬ জন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটসোর্সিং ও মাস্টার রোলের ১৭ জন সদস্যের কেউ ঈদ উপলক্ষে কোন ছুটি পায়নি। তারা মোট ৮৯ জন তিনটি শিফটে কাজ করেন। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে দুপুর ২:৩০টা, দুপুর ২:৩০টা থেকে সাড়ে ১০টা, এবং রাত সাড়ে ১০টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা দায়িত্বে আছেন।
চুক্তিভিত্তিক প্রহরীরা বছরের পর বছর কাজ করলেও তাঁদের চাকরির স্থায়িত্ব নিশ্চিত নয়। এক প্রহরী বললেন, “একটা চাকরির নিশ্চয়তা থাকলে অন্তত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে পারতাম। কিন্তু এখানে যে কোনো সময় চাকরি চলে যেতে পারে।”
নিরাপত্তা কর্মীদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, নির্ধারিত কাজের বাইরে ওভারটাইম করানো হয়, কিন্তু সেই অনুযায়ী পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। বেসিকের উপর যদি আমাদের ওভারটাইম হিসাব করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা আরো উৎসাহ পেতাম। পরিবারের খরচ চালিয়ে মাসের শেষে হাতে তেমন কিছুই থাকে না। অনেকেই বয়সের ভারে ক্লান্ত, তবু জীবিকার তাগিদে কাজ ছাড়তে পারছেন না। তাঁরা চান, তাঁদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হোক, চাকরি স্থায়ী হোক, বেতন কাঠামো উন্নত হোক।
কোম্পানির মাধ্যমে আসা (আউটসোর্সিং) এক প্রহরী জানান, আমি যে কোম্পানির মাধ্যমে এখানে কাজ করছি তাঁরা আমার কাজ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছিল। আমি জানতাম এটা স্থায়ী কিন্তু এখন দেখি অস্থায়ী। সামনে নিয়োগের সময় যেন আমরা যারা আগে থেকে আছি তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা প্রহরীর তদারকির দায়িত্বে থাকা জয়নাল বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কাছে আমানত। আমরা ছুটিতে চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে মন চায় ঠিকই। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য এ সময়টায় আমরা দায়িত্বে থাকি।’
নিরাপত্তা শাখার তত্ত্বাবধায়ক আব্দুর রহমান জানান, ঈদের সময় খুবি ক্যাম্পাসে বিশেষ টহল ব্যবস্থা চালু থাকে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এমনকি রাতের বেলায়ও বিশেষ নজরদারি চলে। কিন্তু সেই তুলনা নিরাপত্তা প্রহরীর সংখ্যা কম। আরো ২০-২৫ জনকে নতুনভাবে যুক্ত করা হলে আমাদের জন্য সহজ হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের থাকতে হয়। পরিবার থেকে দূরে থাকা আসলেই কষ্টের। সংশ্লিষ্ট কর্তিপক্ষকে জানিয়েছি তাদের জন ঈদের দিন ব্যবস্থা রাখতে। তাঁরাও যেন আনন্দে ঈদ করতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট