দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন থেকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কাঠের ঢেঁকি এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। ইতিহাসের পাতা থেকে কাঠের ঢেঁকি এখন ম্মৃতির আধারে চলে যাবার উপক্রম হয়ে হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির কাঠের ঢেঁকি দিয়ে ধান ভাঙ্গানো,চাল গুড়া করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো। প্রত্যন্ত গ্রামীন জনপদের প্রান্তিক কৃষকের প্রত্যেক বাড়িতে এই ঢেঁকি ব্যবহার করতো। সত্তর কিংবা আশির দশকে ধান ভাঙ্গার জন্য কাঠের ঢেঁকি ছাড়া বিকল্প কিছুই ছিল না। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং নতুন নতুন ধান ভাঙ্গানোর যন্ত্রপাতি আবিস্কারের কারনে ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি ঢেঁকির কদর নেই বললেই চলে।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামীন জনপদের কৃষকদের বসতঘরের উঠান কিংবা পাশের চালায় এই কাঠের ঢেঁকির দেখা মিলতো। শীত মৌসুমে পিঠা তৈরি করার জন্য চালের গুড়ার জন্য এই ঢেঁকির বেশ কদর ছিল। ঢেঁকির ধপধপ শব্দে চাল থেকে গুড়া তৈরি করা হতো। এই দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঢেকির ব্যবহার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। গ্রামের কৃষক পরিবারের ঘরে ঘরে নতুন ধান উঠার পর চালের গুড়া দিয়ে তৈরি পিঠার উৎসব দেখা যায় না। এক সময়ে ঢেকির ধপাধপ শব্দে কাক ডাকা ভোরে সকলের ঘুম ভেঙ্গে যেত। বর্তমানে আধুনিক মেশিন দিয়ে চাল গুড়া করে পিঠা তৈরি করার কারনে কাঠের ঢেঁকির কদর নেই। কাঠের ঢেকিতে চালের গুড়া তৈরির জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয় বিধায় এখন আর কেউ আগ্রহ দেখায় না। আধুনিক মেশিনে সহজেই চালের গুড়া তৈরি করা যায় বিধায় ঢেকির ব্যবহার নেই। ফলে অযত্ন আর অবহেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঢেঁকি এখন বিলুপ্তির শেষ প্রান্তে পৌছে গেছে।
উপজেলা থেকে গ্রাম বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সিনিয়র গণমাধ্যমকর্মী আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল বলেন,এক সময়ে আমাদের বাড়িতেই কাঠের ঢেঁকি দিয়ে ধান ভাঙ্গার পর চাল এবং চালের গুড়া তৈরি করা হতো। বাড়ির আশেপাশের অনেকেই আমাদের ঘরে এসে ঢেঁকিতে ধান ভেঙ্গে চালের গুড়া তৈরি করে নিয়ে যেত। কালের আবর্তে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলা থেকে কাঠের ঢেকি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।