ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) পর্যন্ত দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে না পেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও এফ রহমান হলের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাম্যের বন্ধু ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এস এম নাহিয়ান সাম্য হত্যা নিয়ে নোংরা রাজনীতি চলছে দাবি করে বলেন, আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি সাম্যর হত্যাকাণ্ডের পর তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি আমাদের আশাহত করেছে। আমাদের প্রত্যাশা সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
সাম্যর চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে দাবি করে নাহিয়ান বলেন, আরেকটি দুঃখজনক ব্যাপার হলো সাম্যকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে। তার চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কুচক্রী মহল এই ঘৃণিত কাজ করছে তাদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি।
এ সময় একই সেশনের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান শুভ ৯টি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- এক. হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত, গ্রেফতার ও জনসমক্ষে প্রকাশ করা। দুই. ঘটনার সময়কার আশপাশের এলাকার সকল সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা। তিন. হত্যার সহযোগীদের ছেড়ে দেওয়ায় জড়িত পুলিশদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা। চার. শাহবাগ থানার আশপাশের অস্ত্র ও মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও পুলিশের গাফিলতির জবাবদিহি করা। পাঁচ. প্রশাসনের অবহেলার প্রতিবাদ, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা। ছয়. তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে প্রশাসনের সক্রিয়তা এবং সাম্যের পরিবার ও সহপাঠীদের সম্পৃক্ত করা। সাত. বিচার নিশ্চিতে ‘সাম্যর বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি’ গঠন করা। আট. প্রতিবাদে অনুপস্থিত সংগঠনগুলোকে একাত্ম হওয়ার আহ্বান। নয়. ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, আপনাদের সামনে যে দাবি বলা হলো তা আমাদের সবার দাবি। আমাদের এই কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা শুধু সাম্য হত্যার বিচার চাই। আমাদের ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও এই প্রতিবাদ কার্যক্রম আমরা প্যারালালি জারি রাখবো।
সোহেল রানা সাব্বির বলেন, আমরা আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) পর্যন্ত এই মামলার গতিবিধি দেখবো। তারপর যদি আমরা মামলার অগ্রগতিতে খুশি হতে না পারি তাহলে বৃহস্পতিবারই আমরা কলাভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অবস্থান নেবো, সেখান থেকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হোসনে আরা বেগমসহ শিক্ষক মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, হাফিজুর রহমান, আব্দুল হালিম, রাহুল চন্দ্র শাহা ও শিক্ষার্থীরা।