1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

সুন্দরবনে মধু চুরির মহোৎসব, হোতা ‌ ভেজাল মধু ব্যবসায়ী

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

শ্যামনগর প্রতিনিধ: পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিভিন্ন অংশ হতে মধু চুরির মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাছ ও কাঁকড়া শিকারের আড়ালে অসাধু বনজীবিরা সুন্দরবনে ঢুকে এমন অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ।
পেশাদার মৌয়ালদের দাবি মৌসুম শুরুর আগেই সুন্দরবনের মধু চুরির সাথে সুন্দরবন পাড়ে বসবাসরত ভেজাল মধু ব্যবসায়ীরা জড়িত। চাষের ও চিনি জ¦ালিয়ে তৈরী মধুর সাথে খলিশা ফুলের মধু সংবলিত মৌ-চাকের পরাগ মিশ্রণের পরিকল্পনা থেকে তারা এমনটা করছে। পরবর্তীতে এসব ভেজাল মধু সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু বলে প্রচার চালিয়ে উচ্চমুল্যে বিক্রয় তাদের উদ্দেশ্যে।
এদিকে মৌসুম শুরুর আগেই সুন্দরবনের মধু চুরির ঘটনায় রীতিমত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দীর্ঘদিন ধরে মধু সংগ্রহের সাথে জড়িতরা। তাদের দাবি আগেভাগে মধু কেটে নেয়ায় নির্দিষ্ট মৌসুমে সুন্দরবনে ঢুকে প্রত্যাশামত মধু না পাওয়ার শংকা তৈরী হয়েছে। তাছাড়া অপেশাদার জেলে দিয়ে মধু সংগ্রহ করতে যেয়ে হাজার হাজার মধুর চাক সম্পুর্ণভাবে বিনষ্টের সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।
সুন্দরবনসংলগ্ন কদমতলা গ্রামের ইসমাইল হোসেন জানান আগামী ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবন হতে মধু সংগ্রহের অনুমতি মিলবে। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে শত শত অসাধু ব্যক্তি জেলে ও কাঁকড়া শিকারের পাশ নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মধু সংগ্রহ করছে। তিনি আরও জানান অপেশাদার হওয়ার দরুন এসব জেলেরা মধু কাটার সময় সম্পুর্ণ চাক নষ্ট করে ফেলছে। ভেজাল মধু ব্যবসায়ীরা মৌসুমের আগেই পরাগসহ মধুর চাক কেটে নিয়ে আসার জন্য দৈনিক চুক্তিতে উক্ত জেলেদের সুন্দরবনে পাঠাচ্ছে বলেও দাবি তার।
নীলডুমুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ভাষ্য পশ্চিম সুন্দরবনের সম্পুর্ণ সাতক্ষীরাসহ খুলনা রেঞ্জের সীমিত অংশে খলিশা গাছ রয়েছে। এসব অংশ হতে সংগৃহীত খলিশা ফুলের মধু সবচেয়ে উৎকৃষ্ট এবং উন্নত মান ও স্বাদের। তার দাবি চাষের ও চিনি জ¦ালিয়ে তৈরী মধুর সাথে খুলশা ফুলের মধু ও মধুর চাকে থাকা পরাগ মিশ্রিত করে এসব ব্যবসায়ীরা সমুদয় ভেজাল মধুকে খলিশা ফুলের মধু বলে বিক্রি করে থাকে। সেকারনে মৌসুম শুরুর আগেই তারা অনৈতিক উপায়ে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহে উঠেপড়ে লেগেছে।
প্রায় দুই দশক ধরে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহে জড়িত বুড়িগোয়ালীনি গ্রামের আজিজুল গাজী জানান মুলত এপ্রিলের শুরুতে মৌচাক গুলো মধুতে পরিপুর্ন হয়। কিন্তু তার আগেই মধু সংগ্রহের কারনে মৌচাক ক্ষতিগ্রস্থ করার দরুন নির্দিষ্ট মৌসুমে যেয়ে মৌয়ালরা পর্যাপ্ত মধু পায় না। ইতিমধ্যে সুন্দরবন তীরবর্তী বিভিন্ন অংশে দেশের নানা এলাকা থেকে শত শত মন চাষের ও চিনি জ¦ালিয়ে তৈরী মধু এনে জড়ো করা হয়েছে বলেও দাবি তার।
এসব অপরাধ প্রবনতা বন্ধে তিনি মৌসুম শুরুর আগেই সুন্দরবন তীরবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল মধু তৈরীর জন্য প্রস্তুতকৃত চালান আটকের দাবি জানান। আজিজুল গাজী ও আব্দুল খালেকসহ স্থানীয় অসংখ্য পেশাদার মৌযালের দাবি চিনি জ¦ালিয়ে ভেজাল মধু তৈরীর সাথে কৈখালীর বাঙাল রফিকুল, মনির উদ্দিন মল্লিক, জহুর আলী, ভেটখালীর আফজাল, ইব্রাহিম, কালিঞ্চির লিটন, হরিনগরের বাক্কার গাজী, চিনি রশিদ, নুর ইসলাম, আমজাদ, রফিকুল, চুনকুড়ির আহমদ, টেংরাখালীর হাশেম আলী, মুন্সিগঞ্জের খোকন, দাতিনাখালীর শহিদুল, বুড়িগোয়ালীনির আবু হাসান, গাবুরার মিজান, হোসেন আলী, মোটা বাবু, বাবু তরফদার, মধু বাবুসহ অন্তত অর্ধ্বশত ব্যক্তি জড়িত।
মৌসুম শুরুর আগেই মধু সংগ্রহের সাথে জড়িত হওয়ার কথা স্বীকার করেন গাবুরা ও বুড়িগোয়ালীনির দুই জেলে। তাদের ভাষ্য মৌসুমে চার কেজি মধু বিক্রিতে যে দাম মিলবে, বতর্মানে একজিতে সেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া এক কেজি পরাগ ১৮ শ থেকে ২২শ টাকায় দ্বরে মহাজনরা কিনছে। এছাড়া মৌসুম শুরুু না হওয়ায় বর্তমানে সংগ্রহীত মধু ১৪শ থেকে ১৬শ টাকার দ্বরে প্রতি কেজি বিক্রি করছেন তারা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ মশিউর রহমান জানান সুন্দরবন থেকে মধু চুরি ঠেকাতে বনবিভাগের একাধিক টহল টিম কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কেউ সুন্দরবনের মধুসহ আটক হয়নি- উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের বাইরের গ্রামে ভেজাল মধু থাকলে সেখানে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট