সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় এলাকায় পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি বিরূপ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। লবণাক্ত পানিতে প্রতিনিয়ত কাজ করতে গিয়ে তাদের উচ্চ রক্তচাপ, ও হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সাতক্ষীরা তালা উপজেলার আইডিআরটি-উত্তরণে ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত হয় জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ক তথ্য নিয়ে আলোচনা কর্মশালা।
ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম এবং উক্ত কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, অফিসার মনোজ কান্তি রায় সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন।ওয়ার্কশপে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার, মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমত জাহান সুমনা, মেডিকেল অফিসার ডা. জ্যোতির্ময় সরকার, সহকারী সার্জন ডা. মণি মোহন ঘোষ, সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রত্যাশা ঘোষ, সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট মেসবাহ কামাল, রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট দেবজানী চৌধুরী, কো-অর্ডিনেটর রুবাইয়াত আশরাফী, সিনিয়র ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মাহমুদা আক্তার, কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর তন্দ্রা সরকার), কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর রত্না দাস, কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর মনিরা সুলতানা, কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিহা আক্তার এবং কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর মো. ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।
এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে। সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে পানির লবণাক্ততা অত্যধিক মাত্রায় বেড়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় লবণাক্ত পানিতে কাজ করার ফলে নারী এবং পুরুষরা নানাবিধ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছারাও নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলে হার্টের রোগীর সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট এখানকার মানুষের জন্য প্রতিদিনকার যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্মশালায় আলোচকরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্যভিত্তিক কার্যক্রম এবং সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কেবল পরিবেশ নয়, সরাসরি মানুষের শরীর ও জীবনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এখনই সময়, এই সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।