1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।
শিরোনাম :

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সংকটে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য

  • প্রকাশিত: সোমবার, ২ জুন, ২০২৫

সাতক্ষীরা : প্রকৃতির যেসব উপাদান আমাদের বাঁচিয়ে রাখে সেসব উপাদানই যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে প্রাণি ও উদ্ভিদকূলের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর রয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে মাটি, পানি, বায়ু, জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু, সুপেয় পানি, বন, উদ্ভিদবৈচিত্র্য প্রভূতি। এগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হলে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর নষ্ট হয়ে যাবে। প্রকৃতি থেকে আমরা যা যা আজ পর্যন্ত পেয়েছি সেগুলির প্রায় অধিকাংশই বিপন্ন হতে চলেছে। প্রকৃতির সুরক্ষাস্তর একটি আরেকটির সাথে সম্পৃক্ত। একই সাথে প্রতিটির সাথে রয়েছে মানবকুলের নিবিড় সম্পর্ক। তাই বায়ু, মাটি, পানি নষ্ট হলে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে আর জীববৈচিত্র্য নষ্ট হলে মানবকুলের পরিবেশ সম্মতভাবে বেঁচে থাকা কঠিন হবে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হলে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাবে।প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলি নষ্ট হওয়ার পিছনে প্রকৃতিগত ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণ রয়েছে। তীব্রতাপ, তীব্র বৃষ্টিপাত, তীব্রশীত, তীব্র লবণাক্ততা, বজ্রপাত, শীলাবৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তন, শব্দদূষণ, জলাবদ্ধতা, বন্যা, অতিমাত্রায় দূর্যোগ, পানি দূষণ, বায়ু দূষণ অনেকটাই দায়ী।মানবসৃষ্ট কারণগুলি ধরা যায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, অপরিকল্পিত অবকাঠামো গড়ে তোলা, জনসংখ্যাবৃদ্ধি, পরিকল্পনাহীন কৃষি, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার, জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি না করা, লবণ পানির চিংড়ির চাষ, উপকূলের রক্ষাকবচ টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকা, জলাশয় ভরাট করা, প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা, ফসলের বৈচিত্র্যতা আনায়ন না করা, সচেতনতার অভাব প্রভূতি।ক্লাইমেট জার্নালে উল্লেখ করা হয়েছে গত দুই দশকে পরিবেশ বিপর্যয়ের মূলে রয়েছে মানবসৃষ্ট নানা কারণ। যা জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি বন ধবংসের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত জনসংখ্যার মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য মানুষ ৬০ভাগ জ্বালানির চাহিদা পূরণ করছেন বনের কাঠ দিয়ে। এছাড়াও বসতবাড়ি নির্মাণ, ফসল চাষাবাদ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, নগরায়ন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বৃক্ষের পরিচর্যার অভাব, পাহাড় ধ্বংস, বৃক্ষের রোগ, বনবিধি অমান্য করাসহ বিভিন্ন কারণে বন ধ্বংস হচ্ছে।জাতিসংঘের তথ্য মতে প্রকৃতি ধ্বংসের বর্তমান এই ধারা চলতে থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০লক্ষ প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে হচ্ছে তা যদি চলতে থাকে তাহলে ২০৭০সালের মধ্যে বিশ্ব ব্যাপী প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রতি তিনটির মধ্যে একটি প্রজাতি বিলুপ্তি হতে পারে। দেখা গেছে গত ৫০বছরে গড়ে ৬০ শতাংশের বেশি বন্যাপ্রাণী হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে প্রজাতি বিলুপ্তির গড় হার অনেক বেশি।প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে উপকূলীয় বিভিন্ন পেশাজীবীরা মতামত পোষণ করেছেন। সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাড়ী আমার নদীর পাশে আগে শীতের সময়ে অতিথি পাখির দেখা মিলত এখন আর দেখা মেলেনা। গ্রাম গঞ্জে বক, পানকৌড়ি, চড়ুই পাখি, পেঁচা, বুলবুল পাখি চোখে পড়ে না। এসবের জন্য শিকারী, ফাঁস দিয়ে পাখি মারা ব্যক্তি, অতিরিক্ত রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, আমি একজন কৃষক পোকা-মাকড়ের পায়খানা সার হিসাবে জমিতে ব্যবহার হয় এটা ছোট বেলা থেকে জেনে আসছি। এখন পোকামাকড় চোখে পড়ে না। সব সার কীটনাশকে খাওয়া গেছে।সাতক্ষীরার সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, আবাসস্থল নষ্ট, সঠিক পরিচর্যা না করা, অসাধু শিকারীদের তৎপরতা, খাদ্য সংকট, সুপেয় পানীর সংকট, অতিবৃষ্টি, বন্যা, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার কীটনাশকের ব্যবহার, সাগরে তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল পড়া, নিয়ম মেনে বনজ সম্পদ সংগ্রহ না করাসহ অন্যান্য কারণে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংকটাপন্ন হচ্ছে।তিনি জীববৈচিত্র্য বা প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারী বিভিন্ন দপ্তরের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন। বন্যপ্রাণী চিকিৎসায় সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন, পাখিদের আবাসস্থল তৈরী, সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীদের বিশেষ করে বাঘের খাদ্য সংকট নিরসনে খাদ্যের ব্যবস্থা করা, প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় স্থানীয় যুব সম্প্রদায়ের টিম গঠন, দূর্যোগ সহিষ্ণু বৃক্ষ রোপন (যেমন তাল গাছ, খেজুর, নিম, কাঁঠাল, আম প্রভূতি) বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা বুড়িগোয়ালিনীর বাসিন্দা সমাজ সচেতন আনিসুজ্জামান সুমন বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি বিরুপ মনোভাবের কারণে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে শুকুন পাখি হারিয়ে ফেলেছি। নদীতে শুশুকের দেখা মেলেনা। দোয়েল, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ফিঙে, বেঁজি, শিয়াল, ব্যাঙ, বাদুড়, চামচিকে, প্রকৃতির ফিল্টার কেঁচো, শামুক, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, ডাহুক পাখি, খাটাশ, ফড়িং, হাল চাষের গরু, মাছরাঙা হারিয়ে গেছে বা যাচ্ছে। তিনি বিশেষ করে বলেন, শুকুন বিগত দশ বছরে তার চোখে পড়েনি। মৎস্য প্রজাতির কিছু অংশ বিলুপ্তির কথা বলেন। মানুষের রং বা চেহারা পরিবর্তন হচ্ছে। রোগাক্রান্ত হচ্ছে জটিল ও কঠিন রোগে।প্রাণবৈচিত্র্য বিপন্নতার পিছনে অতিরিক্ত লবণাক্ততার প্রকোপ, সুন্দরবন ধ্বংস, অপরিকল্পিত লবণ পানির চিংড়ি ঘের, পাউবোর বেড়িবাঁধের ডিজাইন পরিবর্তন না করা বা টেকসই বাঁধ না থাকা, সরকারি নীতিমালা মেনে না চলা ও নীতিমালার সুষ্ঠ প্রয়োগ না করা, যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা। এক্ষেত্রে তিনি প্রকৃতিগত ও মানবসৃষ্ট কারণ উল্লেখ করেন। তিনি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ঐতিহ্যবাহী ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন প্রবেশে সব ধরনের পাশ পারমিট দুই বছর বন্ধ রাখার কথা বলেন। সুন্দরবনে অভয়ারান্য এলাকা বৃদ্ধির পাশাপাশি বনবিভাগের জনবল বৃদ্ধিসহ জলযানের উন্নয়ন ঘটানো, লবণ পানির চিংড়ি বা মৎস্য চাষ সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করার কথা বলেন।সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন মন্ডল বলেন, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে জলবায়ুগত সমস্যা বেড়েই চলছে। পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়তি জনসংখ্যা দূষণকে ত্বরাণিত করছে। তাই দূষনকে রোধ করতে না পারলে মানবজাতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। প্রাকৃতিক সুরক্ষাস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য দায়ী মানুষের প্রকৃতি বিনাশী কর্মকান্ড। যে সুরক্ষা স্তর আমাদের মানবকূলকে রক্ষা করবে সেই সুরক্ষা স্তর যদি নষ্ট হয় তাহলে পৃথিবী রক্ষা করবে কে এমনই প্রশ্ন নিজেই নিজের কাছে করেন। তিনি দূষণ বন্ধে হাইব্রিডকে কম ব্যবহার করে দেশীয় প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণের কথা বলেন। অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধির কথা বলেন। উপজেলা কৃষি অফিসের প্রেসক্রিপশন ছাড়া সার কীটনাশক ব্যবসায়ীবৃন্দকে ক্রয় ও বিক্রয় না করার কথা বলেন। পরিবেশ ক্ষতিকারক পলিথিন প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী উপাদানের মধ্যে একটি উল্লেখ করে পলিথিন ব্যবহার বন্ধে আইনি প্রক্রিয়া জোরদারকরণ করাসহ মানুষকে সচেতন হওয়ার কথা বলেন।বিজ্ঞান চিন্তা সাময়িকীর লেখা থেকে প্রকাশ পাখিদের যখন ডিম পাড়ার দরকার হয় তখন বাসা বাঁধার দরকার হয়। পাখির বাসাটা এমনভাবে তারা তৈরী করে যেন ডিমটা গড়িয়ে পড়ে যেতে না পারে। এসব চিন্তা করে বাটির মতো বাসা বাঁধে। বাসা তৈরীর সময় দুটি বিষয় মাথায় রাখে একটা নিরাপত্তা ও অপরটি শত্রুদের থেকে রক্ষা পাওয়ার নিশ্চয়তা। গাছকে কেন্দ্র করে জাতীয় উদ্যানে পাখির বসবাস বেশি আর জলাভূমিকে কেন্দ্র করেও অনেক পাখি বসবাস করে। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি বর্তমানে পাখির সংখ্যা কমে গেছে। এর অন্যতম বড় কারণ বৃক্ষ, তরুলতা, গুল্মের ব্যাপক পরিবর্তন। অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মানও পাখিদের কমে যাওয়ায় ভূমিকা রাখছে। ইট কাঠের নগরীতে পাখিদের সংরক্ষণ করা খুবই প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে উদ্ভিদ বৈচিত্র্য যদি না থাকে তবে পাখিদের বসবাস সংকটাপন্ন হয়ে যাবে। বনভূমি ও জলাভূমি দুটিই সংরক্ষণ করা দরকার। জলাভূমি রক্ষা পেলে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য বজায় থাকবে।সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রণী খাতুন জীববৈচিত্র্য, প্রাণবৈচিত্র্য ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংকটাপন্ন বিষয়ে বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ অন্যান্য দূর্যোগ থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে আমাদের সবকিছু করতে হবে। প্রকৃতির প্রতি যেমনটাই অত্যাচার করা হবে ঠিক তেমনটাই আমাদের ফেরত দিবে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের বাঘ আমাদের অন্যান্য সম্পদ। বাঘের কারণে সুন্দরবন টিকে আছে। বাঘ না থাকলে সুন্দরবন টিকে থাকত না। বন্য প্রাণীদেরকে ক্ষতি নাকরে টেকসই পদ্ধতিতে বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা হলে জীববৈচিত্র্য কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে বলে মত প্রকাশ করেন। পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে প্রকৃতি ও পরিবেশকে সুরক্ষা করার কথা বলেন। তিনি বলেন প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা জরুরী।প্রাণ ও প্রকৃতি বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ বলেছেন, বাংলাদেশের প্রাণবৈচিত্র্য এখন চরম সংকটে। শহর থেকে গ্রাম, বন থেকে নদী প্রতিটি পরিবেশেই ধব্ংসের ছাপ স্পষ্ট। মৌমাছি থেকে শুরু করে হাতি পর্যন্ত কোন প্রাণির জীবন সুরক্ষিত নয়। তার খাদ্য উৎস নিশ্চিত নয়। প্রাণির বিচরণ অঞ্চল নিশ্চিত করা হয়নি। তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত সব কিছু প্রাণি ও প্রাণের ক্ষতি করে। অতিমাত্রার দূর্যোগ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করছে। জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, দিন দিন নদী ভরাট হচ্ছে ফলে জলজ প্রাণি হুমকির সম্মুখীন। প্রাণবৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন দেশের রাষ্ট্রীয় আইনে যেসব বিভাগ প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই বিভাগ ও দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব। এটি শুধু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাজ নয় বলে উল্লেখ করেন। স্থানীয় সরকার, কৃষি, পানি সম্পদ, সড়ক এসব বিভাগেরও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বলে জানান। কৃষিতে অতিমাত্রা, অপরিকল্পিত কীটনাশক বা বিষের ব্যবহারের ফলে ব্যাঙ, মৌমাছি, কেঁচো, শামুখ হুুমকির মুখে। কীটনাশকের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছও বিলুপ্তির পথে।প্রাণবৈচিত্র্য হ্রাসের আরেকটি কারণ হল সব প্রাণির সমান গুরুত্ব না দেওয়া। বাঘকে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় তেমনি গুই সাপকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন। বিভিন্ন পাখি, বিভিন্ন সাপ কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। বনে সব ধরনের গাছ, কীটপতঙ্গ, প্রাণি থাকাটা জরুরী বলে মনে করেন।তিনি বলেন উন্নয়ন মানুষ কেন্দ্রিক যেমন হওয়া উচিৎ তেমনি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্যও হওয়া উচিৎ। প্রাণবৈচিত্র্য, উদ্ভিদবৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় মানুষকে কাজে লাগানোর কথা বলেন এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের প্রকাশনা সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে ১২প্রজাতির বন্য প্রাণি হারিয়ে গেছে এবং ৪০প্রজাতি স্তন্যপায়ী, ৪১প্রজাতি পাখি, ৫৮প্রজাতি সরিসৃপ ও ৪প্রজাতির উভচর প্রাণি হুমকির সম্মুখীন।১৯৯২সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের এক চুক্তিতে দেড় শতাধিক বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশও এ চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী।পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২১ মে’২৫ সচিবালয়ে তার অফিস কক্ষে বিশ্ব ব্যাংকের টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহায়তা মিশনের সমাপনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছেন বাংলাদেশে বন পুনরুদ্ধার, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বননির্ভর জনগোষ্ঠীর জীবিকা উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ১লক্ষ ৩হাজার ৯৬০ হেক্টর বনভূমি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে পাহাড়, শালবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে দেশীয় উদ্ভিদের বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।উপকূলের সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে দাবী তোলা হয়েছে সারা বিশ্বে সকল জীববৈচিত্র্য, প্রাণবৈচিত্র্য, উদ্ভিদবৈচিত্র্যকে বাঁচাও, বাঁচতে দাও এই নীতিতে অটল থাকতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট