ডেস্ক রিপোর্ট : ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (২ জুন) বেলা ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা এই বাজেট পেশ করেন। এবার জাতীয় সংসদ না থাকায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে সম্প্রচার করা হয়।
এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর অদ্যাবধি কোন বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
প্রস্তাবিত রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ৯.০ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মাধ্যমে ৪ লক্ষ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস হতে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করছি।
প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে আমাদের সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ও ঋণ সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লক্ষ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৩.৬ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এবং ১ লক্ষ ১ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস হতে নির্বাহ করার প্রস্তাব করছি। আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধ বাবদ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকা।
এবারের বাজেটের আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় কম। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সর্বশেষ বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থাপন করেন। তবে চলতি অর্থবছরের মাঝপথে কাটছাঁটের ফলে সেই বাজেটের বাস্তবায়নযোগ্য আকার দাঁড়ায় সাত লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
বাজেট উত্তর আগামীকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এবছর সংসদ না থাকায় আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না এই বাজেটে। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।