প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ৮, ২০২৫, ৪:২৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ৮, ২০২৫, ১২:৪২ পি.এম
ঈদুল আজহা’র সম্প্রীতি: এক ফ্রেমে ইবি প্রশাসন-শিবির-ছাত্রদল
ইবি প্রতিনিধি: মুসলিমদের জন্য ঈদুল আজহা অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর ত্যাগের মহিমায় মুসলমানদের অন্তরের পরিশুদ্ধতা দিতে আগমন ঘটে এই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই মহোৎসব ত্যাগ, আত্মসমর্পণ ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। ছড়িয়ে দেয় ঐক্যের বাণী। পরীক্ষা নেয়া হয় আত্মোৎসর্গ ও প্রতিহিংসার। ঈদের নামাজের পর এক ফ্রেমে তোলা ছবি কি প্রমাণ দেয় সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ?
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী অবস্থানরত মেস ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রশিবির।
এদিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গরু এবং একটি খাসি কুরবানি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থী, কর্মচারী, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকর্মী ও মালি'সহ প্রায় দুইশত জনের মাঝে কুরবানির গোশত বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে মেসে অবস্থান করা শিক্ষার্থী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে শাখা ছাত্রশিবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষার্থীদের ভোজনের আয়োজন করা হয় এবং আশেপাশে দুস্থ মানুষের মাঝে গোশত বিতরণ করেন সংগঠনটি।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজের পর ভিসি স্যার ও প্রক্টরিয়াল বডির সাথে কুশল বিনিময় হয়। এসময় সদস্য সচিব মিথুন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলাম। বর্তমান প্রশাসন আন্তরিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে।’
মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ত্যাগ ও উৎসর্গের মহিমায় উদ্ভাসিত এই ঈদ আমাদের জীবনে ভ্রাতৃত্ব, সাম্য ও সহমর্মিতার বার্তা নিয়ে আসে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা, মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা সব সময় সচেষ্ট। এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে ক্যাম্পাসের আশেপাশে মেসে বা বাসায় অবস্থানরত আমাদের যেসকল প্রিয় শিক্ষার্থীরা পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাদের কথা ভেবেই আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে এক আনন্দঘন মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীই নয়, আমাদের অমুসলিম ভাই-বোনদের জন্যও আমরা এই আয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। কারণ আমরা সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশক্রমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায়ত উপাচার্যদের উৎসর্গ করে কুরবানি করা হয়েছে। আমি নিজ দায়িত্বে এই কুরবানির মাংস বিদেশি শিক্ষার্থী কর্মচারী, নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ ও প্রতিবন্ধী-সহ অসহায় দুস্থদের মাঝে সুষম বণ্টন করেছি। ঈদুল আজহা'র যে শিক্ষা সেটার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছি।’
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত