ক্রীড়া প্রতিবেদক : আরসিবি আইপিএল শিরোপা জেতার পর বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে ৪ জুনের পদদলনের ঘটনায় ১১ জন প্রাণ হারান এবং অনেকে আহত হন। সেই ঘটনাইয় এবার ক্রিকেটার বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই অভিযোগটি দায়ের করেছেন সমাজকর্মী এইচএম বেঙ্কটেশ, যিনি দাবি করেছেন- আইপিএলের মাধ্যমে জুয়ার সংস্কৃতি’কে উৎসাহিত করেছেন বিরাট কোহলি। তারই ফল হিসেবে এই ভিড় জমে, যা শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী পদদলনের রূপ নেয়। কব্বন পার্ক থানায় জমা দেওয়া অভিযোগে বেঙ্কটেশ বলেন, আইপিএল কোনো খেলা নয়, এটি এখন জুয়ার প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে যা ক্রিকেটকে কলুষিত করছে।
তিনি আরও বলেন, আরসিবি দলের বিরাট কোহলি এই জুয়ায় যুক্ত থাকা সবচেয়ে প্রভাবশালী মুখ। তিনিই মানুষকে উৎসাহিত করেছেন জমায়েতে অংশ নিতে, যার পরিণতিতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই আমি অনুরোধ করছি, এই ট্র্যাজেডির এফআইআরে বিরাট কোহলি ও তার দলের সদস্যদেরও অভিযুক্ত করা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে যে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে, এই নতুন অভিযোগকেও তার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এদিকে, শুক্রবার বেঙ্গালুরুর সেশনস কোর্ট ১৪ দিনের বিচারিক হেফাজতে পাঠিয়েছে আরসিবির এক সিনিয়র কর্মকর্তা নিখিল সোসাল ও তিনজন ইভেন্ট ম্যানেজারকে। ৬ জুন শুক্রবার ভোররাতে কব্বন পার্ক থানা ও সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ-এর যৌথ অভিযানে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এরই মধ্যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা কর্ণাটক হাইকোর্টে গিয়ে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। আদালত আপাতত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ‘কঠোর ব্যবস্থা না নিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
আদালত মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য ৯ জুন পর্যন্ত মুলতবি রেখেছে। এই মামলার আসামিদের তালিকায় রয়েছেন কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রঘু রাম ভাট, সচিব এ শঙ্কর, কোষাধ্যক্ষ ইএস জয়রামসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা। তারা সকলেই এফআইআর বাতিল চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন। এছাড়া, গ্রেপ্তার হওয়া নিখিল সোসালও আদালতে অভিযোগ করেছেন, তাকে কোনো প্রমাণ ছাড়াই, এমনকি প্রাথমিক তদন্ত শুরুর আগেই আটক করা হয়েছে। তাই তিনি তার গ্রেপ্তারকে ‘অবৈধ’ ঘোষণার আবেদন করেছেন।
এর আগে, বেঙ্গালুরু পুলিশ ৫ জুন আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি, ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগসহ একাধিক গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরদিনই বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার বি. দয়ানন্দসহ একাধিক আইপিএস কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে রাজ্য পুলিশ। এভাবে বেঙ্গালুরুতে আইপিএল উদযাপনকে ঘিরে প্রাণহানির ঘটনার তদন্তে যুক্ত হলো একের পর এক নতুন মোড়।