1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।
শিরোনাম :
ডুমুরিয়ায় আ’লীগকে পূনর্বাসনের আয়োজনকারী বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ খোকসায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু সাতক্ষীরা সীমান্তে শাড়ি, ঔষধ ও চিংড়ি মাছের রেণু উদ্ধার পিরোজপুর গ্রীন ফোর্সের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ভেড়ামারায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১৫ ভেড়ামারায় ছুটিতে চলছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নগরীতে গণধোলাইয়ের শিকার ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষ ১২ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত ইসরাইলের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ইঙ্গিত লেখা ছিল কুরআনের সূরা আল-বাকারায় কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

সাতক্ষীরায় সৌদি খেজুরের চাষ

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের কালীগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নে যখন পৌঁছালাম, সূর্য তখন মধ্যগগনে। গরম হাওয়া এসে শরীরে লাগছিল। মনে হচ্ছিল, উনুনের আঁচ শরীরে ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে। বেশ খানিকটা খোঁজাখুঁজির পর হদিস পাওয়া গেল শোকর আলীর বাড়ির।
পাকা সড়ক থেকে নেমে গেছে মাটির রাস্তা। কয়েক পা হাঁটলেই সামনে হাত দু-এক চওড়া বাঁশের সাঁকো। সাঁকো পেরোতেই ডানে পুকুরপাড়ে সুন্দরবনের কেওড়াগাছ। গাছে ঝুলছে কেওড়া ফল। বামে কতবেলগাছ। গাছের গাঢ় সবুজ পাতার মাঝে ঝুলছে মাঝারি আকৃতির কতবেল।
এসব পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতেই সরু পথের ধারে বেশ কয়েকটি মাটির বাড়ি চোখে পড়ে। শোকর আলীর বাড়ি কোনটা—এমন প্রশ্নের জবাবে এলাকার এক বাসিন্দা হাতের আঙুল দিয়ে সবশেষ বাড়িটি দেখালেন। বললেন, এটিকে লোকজন এখন ‘খেজুরবাড়ি’ বলে ডাকে। বাড়িতে সৌদি আরবের খেজুরগাছ চাষ হচ্ছে। একটি গাছে খেঁজুরও এসেছে।
বাড়িটিতে ঢুকতেই চোখে পড়ল নীল রঙের জাল দিয়ে ঘেরা শত শত খেজুরগাছের চারা।
টিনের চালা দেওয়া ছিমছাম বাড়িটির উঠোনে বেশ কিছু লোক জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের মাঝখানে মাটিতে বসে খেজুরগাছের চারা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছিলেন এক বৃদ্ধ। জানা গেল তিনিই শোকর আলী। কথা বলতে চাইলে হাসিমুখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বললেন।
শোকর আলীর বসতবাড়িতে শত শত খেজুরগাছ আছে। এগুলো সৌদি আরবের মরিয়ম জাতের খেজুরগাছ বলে দাবি শোকর আলীর
এই ফাঁকে কথা হলো মো. মূসা নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। এলাকায় তাঁর মাছ চাষের প্রকল্প আছে। তিনি বললেন, প্রকল্পের ভেতরে রোপণ করার জন্য ২১টি খেজুরগাছের চারা কিনতে এসেছেন তিনি।
শোকর আলীকে দেখিয়ে মো. মূসা বললেন, ‘প্রথমে উনি (শোকর আলী) যখন এসব শুরু করেন, তখন আমার বিশ্বাস হয়নি যে এই খেজুরগাছ এখানে হওয়া সম্ভব। কিন্তু এখন ফল এসেছে দেখে ভাবছি, আমিও খেজুরগাছ লাগাব।’

কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতের কাজ শেষ করে ফেলেন শোকর আলী। কথায় কথায় জানালেন, তাঁর বয়স এখন প্রায় ৬০ ছুঁই ছুঁই। একসময় জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। তবে দেশটিতে গিয়ে তিনি ভাগ্য ফেরাতে পারেননি। ছয় বছর পর দেশে ফিরে আসেন তিনি। সঙ্গে করে নিয়ে আসেন সৌদি আরবের মরিয়ম জাতের খেজুরের বীজ। সৌদি আরবে খেজুরবাগানে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের বসতবাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন মরিয়ম খেজুরের বীজ। বীজ থেকে চারা হয়। আর চার বছরের মাথায় একটি গাছে এসেছে ফল।
স্থানীয় লোকজন শোকর আলীর বাড়িটিকে ‘খেজুরবাড়ি’ বলে ডাকে
কথা বলতে বলতে শোকর আলী নিয়ে গেলেন ফলসহ মরিয়ম খেজুরগাছটি দেখাতে। লম্বায় পাঁচ ফুট গাছটিতে রয়েছে সাতটি খেজুরের ছড়া (থোকা)। খেজুরের ভারে ছড়াগুলো প্রায় মাটি ছুঁই ছুঁই। চিকন বাঁশের ফালি দিয়ে ছড়াগুলো ওপরের দিকে তুলে রাখা হয়েছে।
প্রতিটিতে ছড়ায় যে পরিমাণ খেজুর এসেছে, তার ওজন তিন থেকে সাড়ে তিন কেজির মতো হবে বলে জানালেন শোকর আলী। তিনি বললেন, তাঁর দুই ছেলে বর্তমানে সৌদি আরবে থাকেন। তাঁদের মাধ্যমে মরিয়ম খেজুরের বীজ দেশে এনে এখন চারা তৈরি করছেন তিনি। তাঁর বসতভিটাটি ১৫ কাঠা জায়গার ওপর। এর মধ্যে প্রায় ১২ কাঠা জায়গাতেই খেজুরের চারা রোপণ করেছেন তিনি। গত বছর থেকে নিয়মিত চারা বিক্রি করছেন। জেলার বাইরে থেকেও লোকজন চারা কিনতে আসছেন। প্রতিটি চারা ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

ছোট-বড় মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ১৬ হাজার মরিয়ম খেজুরের চারা নিজের এই নার্সারিতে রয়েছে বলে জানালেন শোকর আলী। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য তিনি আলাদাভাবে দুই বিঘা জমি ইজারা নিয়েছেন।
শোকর আলী বলেন, ‘আমি ছয় বছর সৌদি আরব ছিলাম। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। তবে সেখানে খেজুরবাগানে কাজ করার যে অভিজ্ঞতা, তা দিয়ে এখন আর্থিকভাবে সফল হওয়ার চেষ্টা করছি।’
দেশে এই গাছ চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না বলে জানালেন শোকর আলী। তিনি বলেন, দেশি গাছে যে ধরনের পরিচর্যা, একই পরিচর্যা মরিয়ম খেজুরগাছের জন্যও। প্রতি বিঘা জমিতে ১২০টি খেজুরগাছ রোপণ করা সম্ভব। প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে গাছে ফল এলে কেটে ফেলতে হয়। কারণ, চারা গাছের ফল কেটে না দিলে গাছ বড় হবে না।
সৌদি আরবে খেজুরবাগানে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে শোকর আলীর। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের বসতবাড়ির আঙিনায় তিনি রোপণ করেন সৌদি থেকে আনা খেজুরের বীজ
গাছে ফল আসার তিন মাসের মাথায় মরিয়ম খেজুর পেকে যায় বলে জানালেন শোকর আলী। তিনি বলেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর যে গাছটিতে খেজুর এসেছে, তা আর ২০ দিনের মধ্যে পেকে যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন।
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী শোকর আলী। তিনি বলেন, ‘চেষ্টার কোনো শেষ নেই আর মাবুদ যদি রহম করেন, সফল হতে সময় লাগবে না।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসীম উদ্দীন এই প্রতিবেদককে ‌‌বলেন, খেজুরটি আসলেই মরিয়ম জাতের কি না, তা তাঁরা যাচাই করতে পারেননি। তবে এমনটা শুনেছেন। একটি গাছে যে ফল এসেছে, তা আশাব্যঞ্জক। ইতিবাচক ফল পেলে ভবিষ্যতে এই গাছ পরীক্ষামূলকভাবে বসতবাড়িতে রোপণের জন্য তাঁরা লোকজনকে উৎসাহিত করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট