সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কলার পাতায় মজলিস খাওয়ার প্রচলন। এক সময় কলার গাছের পাতা ছিল মজলিস খাবারের প্রধান আকর্ষণ।
যে কোন অনুষ্ঠানে খাবারের আয়োজন ছিল সে অনুষ্ঠানের জন্য এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্থানীয় বিভিন্ন কলার বাগান থেকে কলাপাতা সংগ্রহের ধুম পড়ে যেত। বর্তমানে একবার ব্যবহার উপযোগী থালা আর গ্লাস অতি সহজেই বাজারে পাওয়া যাওয়ায় কলার পাতায় আর খাবার পরিবেশন করা হয় না। ওয়ান টাইম প্লেট আসাতেই কলার পাতা বিলীন।
সাতক্ষীরা জেলার।বিভিন্ন গ্রামের কিছু বয়স্কদের কাছে কলা পাতায় মজলিস খাবারের বিষয় জানতে চাইলে তারা মোহনা টেলিভিশনের এই প্রতিবেদক এর সাথে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন।
শ্যামনগর উপজেলার বুড়ি গোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গা বাটি গ্রামের মোঃ জাকির হোসেন হাওলাদার (৬০) বলেন, ১৫-২০ বছর আগে কলার পাতা ছাড়া কোন মজলিস /একচল্লিশা/শ্রাদ্ধ যে নামেই বলেন কোন খাওয়াই হতো না। মজলিসের দিন তারিখ ঠিক হওয়ার ৫-৭দিন আগে থেকেই কলাপাতা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত থাকতো যুবক-ছেলেরা, তা পানি ঢেলে ধুয়ে শুকনো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে একটা জায়গায় রাখত। আর আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী সবাই মিলে সারি-সারি মাটিতে পাটের বস্তা বিছিয়ে বসে কলাপাতায় রেখে খাবার খাওয়া হতো।
শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ছোট ভেটখালী গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম(৫৫) বলেন, বর্তমানে প্লাস্টিকের ওয়ান টাইম প্লেট আর গ্লাসে হারিয়ে গেছে আগের সেই দিনের সেই ঐতিহ্যবাহী কলার পাতায় খাবার পরিবেশন। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না সেই কলার পাতায় মজলিস খাওয়া।
নুরনগর ইউনিয়নের কলতলীগ্রামের মানবাধিকার নেতা নুরুল্লাহ আলামিন (৫৫)বলেন , বর্তমান যুগের মানুষ ওইসব কলার পাতায় খাওয়া ভুলে যেতে বসেছে। কারণ, এখন ১-২টাকা হলেই পাওয়া যায় ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের প্লেট-গ্লাস।