ডেস্ক রিপোর্ট : গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার (৪ জুলাই) হামাস মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক জবাব’ দিয়েছে এবং চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। এই চুক্তিতে জিম্মিদের মুক্তি এবং সংঘাত অবসানের বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা কাতার ও মিশরকে তাদের জবাব দিয়েছেন এবং এটি চুক্তি অর্জনে সহায়ক হবে বলে মনে করেন।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আগ্রাসন বন্ধের জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামাস এই যুদ্ধবিরতির কাঠামোর ভিত্তিতে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় ৬০ দিনের একটি চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ইসরায়েল ইতোমধ্যেই যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো মেনে নিয়েছে এবং এই সময়ে সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার গাজা সিটির আল-সাবরা গার্লস স্কুল ও আল-হুররিয়া স্কুলে ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। খান ইউনিস এবং জাবালিয়াতেও অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। রাফায় ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) ফিল্ড হাসপাতালের একজন স্বাস্থ্যকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রেড ক্রস জানিয়েছে, এমন ঘটনা গাজায় প্রতিদিনের বাস্তবতা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল গাজার ৮৫ শতাংশ এলাকাকে সামরিক অঞ্চল ঘোষণা করেছে। শুধু মার্চের পর নতুন করে ৭ লাখ ১৪ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। গত চার মাস ধরে গাজায় এক ফোঁটা জ্বালানিও প্রবেশ করেনি, যার ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। নাসের হাসপাতাল এখন একটি বিশাল ট্রমা ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতেও নিরাপত্তা মিলছে না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্র ও ত্রাণবহরের আশেপাশে অন্তত ৬১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু ও তরুণ।