ডেস্ক রিপোর্ট : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী ও তার ছোট ভাই সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয় থেকে তাদের নামে পৃথক দুটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বাড়িতে কাউকে না পেয়ে বাড়ির গ্রিলে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী, ২১ কর্মদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে দুদকের কুষ্টিয়া জেলা অফিসের উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল উপজেলার সোনাইকুণ্ড গ্রামে গিয়ে অভিযুক্তদের বাড়িতে উপস্থিত হয়। তবে তারা পলাতক থাকায় কাউকে না পেয়ে বাড়ির গ্রিলে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে, গত ৩০ জুন দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ ছুনিয়া খানম রেজাউল হক ও টোকেন চৌধুরীর নামে থাকা ১৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
রেজাউল হক চৌধুরী ২০১৪ ও ২০২৪ সালে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। তার ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ জুলাই সরকার পরিবর্তনের পর থেকে রেজাউল হক ও তার ভাই টোকেন চৌধুরী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। বর্তমানে তারা কেউই নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন না।
দুদকের নোটিশ ও ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রেজাউল হক ও টোকেন চৌধুরীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে ইমরান চৌধুরী কলিন্স বলেন, দুদকের নোটিশের বিষয়ে শুনেছি, তবে এখনো হাতে পাইনি। ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়টিও আমরা সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছি। আমাদের কোনো অবৈধ সম্পদ নেই, বরং আমরা ব্যাংকের কাছে ঋণগ্রস্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পদের হিসাব ফরম জমা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী ও তার ছোট ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। তাদের সম্পদের বিবরণী চেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তারা বর্তমানে বাড়িতে না থাকায় দুদক কর্মকর্তারা গিয়ে বাড়ির গ্রিলে নোটিশ টানিয়ে দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিবরণী জমা না দিলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।