ডেস্ক রিপোর্ট : ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, এ অভিযোগে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কারণ হিসেবে ইসি জানিয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) এমন অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান নেই। দুদকের চিঠির এ সংক্রান্ত জবাব দিয়েছে ইসি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আমাদের রিপ্লাই জানিয়ে দিয়েছি। দুদককে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, আরপিও-এর বিধানে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আরপিও-তে এ ধরনের কোনো প্রভিশন নেই জানিয়ে দিয়েছি।’
গত ২২ মে দুদকের তরফে নির্বাচন কমিশন সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইসিতে দাখিলকৃত হলফনামায় নিজের সম্পদের বিষয়ে অসত্য তথ্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর আওতায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, দুদকে শেখ হাসিনার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে হলফনামায় ৬ দশমিক ৫০ একর কৃষিজমি এবং তার দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখিয়েছেন।
কিন্তু দুদক যাচাই করে দেখেছে, শেখ হাসিনার নামে ২৮ দশমিক ৪১১ একর কৃষিজমি রয়েছে। যার মধ্যে কেনা জমির মোট দাম ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। এ হিসেবে তিনি ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন এবং ক্রয়মূল্যও প্রকৃত দামের চেয়ে ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখিয়েছেন, যা হলফনামায় ‘অসত্য তথ্য দেওয়ার শামিল’।
ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্য-অযোগ্যতার বিষয়টি রয়েছে। হলফনামার এমন কোনো তথ্য অসত্য দিলেন প্রার্থী, যা তার প্রার্থী বা নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্যতা- তাহলে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, যেমন ঋণ খেলাপের বিষয়টি অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে; হলফনামায় এ ধরনের বিষয়ে অসত্য তথ্য থাকলে ইসির করার কিছু থাকে। কিন্তু সম্পদের তথ্যে গড়মিল হলে বা অসত্য তথ্য দিয়েছে অভিযোগ আনলে এ সংক্রান্ত বিষয়টি অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে না। সেক্ষেত্রে ইসির করার কিছু থাকে না।
জানা যায়, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার একগুচ্ছ আইনির সংস্কার আসছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ইতোমধ্যে হলফনামার অসত্য তথ্য দিলে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেওয়া এবং নির্বাচন বাতিলের মতো সুপারিশ করেছে।
সার্বিক সুপারিশ পযালোচনা করে আরপিও সংস্কার প্রয়োজনীয় প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত করলে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে সায় পেলে পরবর্তীতে অধ্যাদেশ আকারে সংশোধন যুক্ত হতে পারে।