1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

সুন্দরবনের জানা অজানা বিভিন্ন ইতিহাস নিয়ে জানতে হবে নতুন প্রজন্মকে পর্ব ৬৩

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত প্রশস্ত বনভূমিকেই বলা হয় সুন্দরবন। এটি বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। এই বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জুড়ে অবস্থিত।
ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই বন, যার মধ্যে ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে আর বাকি অংশ রয়েছে ভারতে। সুন্দরবনকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি বাংলাদেশের জন্য প্রকৃতির উপহার।

বাংলায় সুন্দরবনের আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমি। তবে সুন্দরবনের নাম মূলত রাখা হয়েছে সুন্দরী গাছের নামানুসারে। সুন্দরবনে সুন্দরী গাছ সবচেয়ে বেশি।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জীব-বৈচিত্র্যের আধার এই সুন্দরবনে ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৮টি উভচর প্রজাতির আবাস্থল। সুন্দরবনে রয়েছে বিখ্যাত প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগার।আছে নানা ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির, সাপ, বিভিন্ন ধরনের পাখিসহ অসংখ্য প্রাণী।
জরিপ মোতাবেক, ১০৬ বাঘ এবং এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ চিত্রা হরিণ রয়েছে এই সুন্দরবনে। প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি বিদেশি পর্যটক সুন্দরবনে ঘুরতে আসেন। পাখি বিষয়ক পর্যবেক্ষণ পাঠ ও গবেষণার ক্ষেত্রে পাখি-বিজ্ঞানীদের জন্য সুন্দরবন এক অনন্য উদাহরণ।

সুন্দরবনের বনজ বৈচিত্র্যের মধ্যে প্রধান হচ্ছে সুন্দরী বৃক্ষ। এছাড়া রয়েছে গেওয়া, গড়ান, ধুন্দল ও কেওড়াসহ অনেক রকমের গাছ। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত প্রেইন এর হিসেব মতে, সুন্দরবনে সর্বমোট ২৪৫ শ্রেণীর ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। সুন্দরবনে রয়েছে বিখ্যাত গোলপাতা গাছ, বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস, গুল্ম , শণ, নলখাগড়া। সুন্দরবনে রয়েছে অসংখ্য মৌচাক, যা থেকে প্রচুর পরিমাণে মধু সংগ্রহ করে মৌয়ালরা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই মধু।

সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
: গলদা, বাগদা চিংড়ি বাদে অন্যান্য যে মাছ সেগুলোকে সাদা মাছ বলা হয়।
গলদা, বাগদাসহ সব চিংড়ি প্রজাতিকে বোঝায়। সুন্দরবনে পাওয়া যায় হাজার হাজার কাঁকড়া, তিতপুটি মাছ, কালো হাঙর, ইলশা কামট, ঠুটি কামট ইত্যাদি। সুন্দরবনে শিড়দারওয়ালা মাছ রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির। আর বাণিজ্যিক মাছ রয়েছে ১২০ প্রজাতির, কাঁকড়া ও চিংড়ি রয়েছে ৯ প্রজাতির আর শামুক ১২ প্রজাতির।

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে সুন্দরবনের ভূমিকা অপরিসীম। এটি দেশের বনজ সম্পদের একক বৃহত্তম উৎস। এ বন থেকে জ্বালানি কাঠ, গোলপাতা, মধু, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। এগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (১৯৯৫) সালে জানিয়েছে, সুন্দরবনের কাঠ ও জ্বালানি থেকে আয় হয় প্রায় ৪৫ শতাংশ। এছাড়া নিউজপ্রিন্ট, দিয়াশলাই, হার্ডবোর্ড, নৌকা, আসবাবপত্র সুন্দরবন থেকে আহরিত কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জনসংখ্যা ও তাদের সম্পদের প্রাকৃতিক নিরাপত্তালয় হিসেবে সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

: জামতলায় একটি টাওয়ার আছে এখান থেকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য কিছুটা চোখ বুলানো যায়। আর ভাগ্যে ভালো থাকলে এখান থেকে হরিণ কিংবা বাঘের দেখা পাওয়া যেতে পারে।
: মান্দার বাড়িয়া সমুদ্রসৈকতের কিছুটা অংশ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়েছে। তবুও এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়।
হিরণ পয়েন্টের কাঠের তৈরি সুন্দর রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে নয়নাভিরাম সব সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখান থেকে হরিণ, বানর, কুমির ও গুই-সাপ দেখা যায়। মাঝে মাঝে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও দেখা যায়।
দুবলার চর সুন্দরবনের অন্তর্গত ছোট একটি চর। মাছ ধরার মৌসুমে এখানে জেলেদের বসতি গড়ে ওঠে। তাই এখানে অনেক পর্যটক বেড়াতে আসে। জেলেদের মাছ ধরা, তাদের সংগ্রাম-মুখর জীবনযাত্রা, তাদের রাত্রিযাপন ইত্যাদি এখানে দেখা যায়। মাছ শুটকি, আহরিত মাছ ধরাও এখানে দেখা যায়। প্রতিবছর এখানে বসে পূর্ণমার মেলা, দেশি বিদেশী অনেক পর্যটক এখানে ভিড় করেন।
: কটকা সী বিচ অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর। এখানে বেলাভূমি জুড়ে আকা থাকে লাল কাঁকড়াদের শিল্পকর্ম। নয়নাভিরাম এই দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট