1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫১ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

দখল ও দূষণে সাতক্ষীরার ২৭ নদ-নদী : হুমকিতে কৃষিখাত

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: দখল ও দূষণে সাতক্ষীরার ২৭ নদ-নদী। দেশের সর্ব দক্ষিণ পশ্চিমের জেলা সাতক্ষীরার এ জনপদে ছোট-বড় মোট ২৭ নদ-নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল অবস্থা বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী। নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও নদীর জোয়ার ভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরার অধিকাংশ নদী তার গতি প্রকৃতি হারিয়ে ফেলেছে। কপোতাক্ষ, বেতনা, কাকশিয়ালী, মরিচ্চাপ, যমুনা, সোনাই, বলুয়া, গলঘেষিয়া, গুতিয়াখালি, সাপমারা নদীসহ অধিকাংশ নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ফাঁরাক্কা বাঁধ, অপরিকল্পিত ব্রিজ, স্লুইচগেট, বাঁধ নির্মাণ, চর দখল করে ইটভাটা তৈরি এবং নদী শাসন করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের ফলে সাতক্ষীরার ২৭টি ছোট-বড় নদীর অধিকাংশই মৃত প্রায়। কিন্তু অধিকাংশ দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসক। বরং অনেকেই স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে বন্দোবস্ত বাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলার প্রধান নদ-নদী। নদীর বুকে বসত ঘর, বেড়ি বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষের কারণে সাতক্ষীরা ছাড়াও ভৌগোলিক অবস্থানগতভাবে সংলগ্ন খুলনা ও যশোর এলাকার কয়েকটি নদী এরই মধ্যে মারা গেছে। কয়েকটি নদী অস্তিত্ব হারানোর পাশাপাশি অনেকগুলো মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে ।স্বাধীনতা পরবর্তীকালে প্রথম এক দশক পর্যন্ত নদীগুলো প্রবাহমনা থাকলেও আশির দশক থেকে এর মরণদশা শুরু হয়। ফলে পানি নিষ্কাশনের অভাবে চলতি বর্ষা মৌসুমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বছরে প্রায় ৪/৫ মাস জলাবদ্ধতা স্থায়ী থাকায় এ জনপদে কৃষকদের ফসল ফলানো দুষ্কর হয়ে পড়ে। সুন্দরবন ও সাগর বিধৌত সুজলা সুফলা সাতক্ষীরা জেলায় ২৭টি নদ-নদীর তীরে গড়ে উঠেছে শহর বন্দর ও জনপদ। স্বেচ্ছাচারিভাবে নদীর তীরে এমনকি চর দখল করে নদীর মধ্যেও গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি, দোকানপাট, ইটভাটা, কৃষিখামার। পানি প্রবাহ হারিয়ে মূমুর্ষ দশায় নদী গুলোর এ দখলদারিত্ব নদীর অস্তিত্বকে আরেক দফা হারিয়ে দিয়েছে। ফলে জেলার ২/১ নদী বাদে অধিকাংশ নদীতে বন্ধ হয়ে গেছে জোয়ার-ভাটা। ফলে সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ, বেতনা, কাকশিয়ালী, খোলপেটুয়া, কালিন্দী, মরিচ্চাপ, যমুনা, সোনাই, বলুয়া, গলঘেষিয়া, গুতিয়াখালি, সাপমারা নদীসহ জেলার ছোট-বড় ২৭টি নদ নদীর অস্তিত্ব নেই বল্লে¬ই চলে। এসব নদীতে একসময় বড় বড় লঞ্চ, ইস্টিমার, গহনার নৌকা চলতো। সে সময় নদীগুলোতে প্রবল জোয়ার ও স্রোত থাকলেও এখন তা মরা খালের মত নিশ্চল হয়ে পড়ে আছে। নদী ব্যবস্থাপনা লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ায় নৌ পরিবহণ ব্যবস্থা হারিয়ে গিয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের কোল ঘেঁষে প্রবাহিত বেতনা নদী দখলের ফলে তার মৃত্যু ঘটেছে। বেতনা নদীর বিনেরপোতার দুই তীর দিয়ে নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে ২০ থেকে ২৫টি ইটভাটা। চরভরাটিয়া জমি দখল করে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে কাগজপাত্র তৈরি করে ব্যক্তি মালিকানার নামে গড়ে তুলছে স্থাপনা। বিনেরপোতা ব্রিজের দক্ষিন পশ্চিম প্রান্তে নদীর চরে দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া সেকেনদাঁড়ী গ্রামের আহসান উল্লাহ ও তার ভাই কবির হোসেন বিলাস বহুল পাকা ইমারত তৈরি করে গড়ে তুলছেন রাফসান ফুড্স লিমিটেড এর নামে মসলা ফ্যাক্টরি। সেখানে রিতিমত চার তলা ফাউন্ডেশন করে নির্মাণ হচ্ছে পাকা বিল্ডিং। কপোতাক্ষ,যমুনা ও মরিচচ্চাপ নদীরও একই অবস্থা। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা,ইটভাটা,বাড়ি-ঘর, দোকান পাট ও বিভিন্ন বিনোদনের পার্ক।সাতক্ষীরার নদ-নদী গুলোর মৃত্যুর প্রধান কারণ প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় দখল দারিত্ব ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত স্লুইচগেট। এছাড়াও উপক‚লীয় বাঁধ প্রকল্প, অপরিকল্পিত স্লুইচগেট ছাড়াও এ অঞ্চলের নদীর ওপর ৪৮টি সেতু নদীমৃত্যুর অন্যতম কারণ। এছাড়া ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে উজানে পানির চাপ কমে যাওয়াও নদী মৃত্যুর অপর কারণ। নদী সমূহ ও সংযোগ স্থাপনকারী খালে অপরিকল্পিত নির্মাণ এবং চিংড়ি চাষের নামে ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ গতি হ্রাস করাও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে নদী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। স্থানীয় প্রশাসন ও এসিল্যান্ড অফিস এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড কখনো দখলদারদের বিরুদ্বে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে নদী দখল আরও বেড়ে চলেছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগে ২১৬ টি স্লুইচগেট গেট রয়েছে। সংশিলিষ্ট সূত্র জানিয়েছে এর মধ্যে ২৮ টি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৫০টির তলদেশ পলি জমে উঁচু হয়ে যাওয়ায় ও অবৈধ দখল দারিত্বের কারণে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। নদীসমূহ পানি প্রবাহ হারানোর পেছনে এসব স্লুইচগেট অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা ।কপোতাক্ষর শিবসার সেই স্রোত আর এখন নেই। কপোতাক্ষর গোড়া চৌগাছার তাহিরপুর থেকে পাইকগাছার শিববাড়ি পর্যন্ত ১৭৫ কি.মি এলাকা প্রবাহহীন হয়ে পড়ায় এক সময় প্রতি বছরই নদীর তীরে দেখা দিতো ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। গত কয়েক বছর আগে সরকারের পক্ষ থেকে ২৬১ কোটি ৫৪ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে কপোতাক্ষ খনন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে আর আগের মত জোয়ার-ভাটা হয় না। কোন ভাবে নদীটি মরা খালের মত বেঁচে আছে। বেতনা নদী সহ মরিচ্চাপ ও যমুনা খনন করা হলেও দখল দারিত্বের কারণে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। কাকশিয়ালী নদীরও নাব্যতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। বেতনা নদী তার নাব্যতা হারিয়ে পুরোপুরি একটি মৃত খালে রূপ নিয়েছে। অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে মরিচ্চাপের । এসব নদীর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য বারবার জনগণের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হলেও তা খুব বেশি কাজে আসছে না। নদী মৃত্যুর ফলে দেশের দক্ষিণ জনপদের কৃষিখাতও আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে।একইভাবে সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী ইছামতি ও সোনায় নদীর এখন পলিযুক্ত হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে এই নদীতে বিশাল বিশাল চর জেগেছে। ভারতীয় ভূখন্ডের নদনদীর সাথে সংযুক্ত এ দুটি নদী বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত বিভাজন করে আছে। সুন্দরবনের নদী আড়পাঙাসিয়া, মাদার, মালঞ্চ, চুনা, ও,খোলপেটুয়া নদীর মাঝেও জেগে উঠছে বড়বড় চর। এরই নিকটস্থ যমুনা নদী মারা গেছে তিন দশক আগে।সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-১) নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দিন আহমেদ ‌জানান, পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ এখন আর দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা যশোর ও সাতক্ষীরার নদ-নদীতে নানা কারণে আসতে পারে না। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের কারণে দক্ষিণের সাগর থেকে আসা উজানের পানি পলি নিয়ে আর ফিরে যেতে না পারায় এ এলাকার নদীগুলো পলিযুক্ত হয়ে পড়েছে । নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে পড়ায় তা পানি প্রবাহ হারিয়েছে বলেও জানান তিনি। আর যখনই নদীর মৃত্যু হচ্ছে তখনি দখল হয়ে যাচ্ছে নদীর জমি। ওই দখলদারদের রিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। কিন্তু সেখান থেকে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অনেকেই কাগজ তৈরি করে চর ভরাটিয়া নদীর জমিতে গড়ে তুলছে স্থাপনা। এসব কারণে দ্রæত নদী গুলো হারিয়ে ফেলছে তার গতি-প্রকৃতি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দিন আহমেদ ‌আরও জানান, নদ-নদী বাঁচিয়ে রাখতে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রোজেক্ট রেডি করতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা শহরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়েরের খাল খেজুরডাঙ্গা থেকে এল্লারচর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে খননের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া দেবহাটা উপজেলার হাবড়া নদী,সাপমারাখাল ও কলারোয়ার নৌওখালী খাল খননের ব্যাপারে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অচিরেই নদীর তীরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে জানানো হবে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান জোরপূর্বক নদীখাল দখল দূষণ উচ্ছেদের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো পর্যন্ত আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই বেদখল হওয়া নদীখাল উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে‌ সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ইতিমধ্য জানানো হয়েছে জরুরী ভিত্তিতে তাদের বেদখল হওয়া জমি খাল নদীর তালিকা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য, তাছাড়া জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ আরো বলেন আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন চারিদিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সরকারি ক্ষার জমি সরকারি নদী সরকারি খাল সরকারি রাস্তা স্থাপনা উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে ‍,,

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট