1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।
শিরোনাম :
চৌগাছায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু নগরীতে চালককে খুন করে ইজিবাইক ছিনতাই সাতক্ষীরা সিটি কলেজ ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ ফকিরহাটে জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণ শেষে স্বপ্নের মেলা অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ-নির্বাচনি এলাকা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা: আলী রীয়াজ ইরানের ফোর্দোতে ছয়টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র সাবেক তিন সিইসির বিরুদ্ধে ইসিতে বিএনপির অভিযোগ সরকারি চাকরির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়েনি: আইএইএ ‘আগামী নির্বাচন হবে পুলিশ বাহিনীর কলঙ্ক মোছার নির্বাচন’

রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫

সিরাজুল ইসলাম : ইসলামি বর্ষপঞ্জি অনুসারে রমজান মাস হলো নবম মাস। যেই মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলমান নর-নারীরা রোজা পালন করে থাকে এবং ইবাদতে মশগুল থাকে। রমজান মাসে রোজা পালন ইসলামি পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। এ রমজান মাসে ৩ ভাগ রয়েছে। প্রথম ১০ দিন রহমতের। দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের। তৃতীয় এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের। এ পবিত্র মাসে মুসলমান নর-নারীরা মহান রবের দয়া ও বরকত প্রাপ্তির যোগ্য করে তোলে।
রোজা শব্দটি ফার্সি শব্দ। যার অর্থ হলো- উপবাস করা। আর সওম মানেই রোজা। সাওম আরবি শব্দ। যার অর্থ বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা ও সরল সোজা হওয়া। সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোজা বলা হয়। [আল মুখতাসারুল কুদরি ও তাফসিরে নঈমী]
মহান আল্লাহতায়ালা ঘোষণার মাধ্যমে হিজরতের দেড় বছর পর অর্থাৎ হিজরি সনের দ্বিতীয় হিজরীতে রমজানের আগের মাস শাবান মাসের ১০ তারিখে মুসলমানেদর ওপর পবিত্র রমজান মাসের রোজা ফরজ করেছেন। সব সুস্থ, প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞানবান মুসলিম নর-নারীর ওপর এ পবিত্র রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা বিদ্বেষ পরিত্যাগ করে তাকওয়া হাসিলে রমজানের রোজার গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। [দূররে মুখতার, খাযাইনুল ইরফান ও খাযিন]
ইসলামি আইন শাস্ত্রবিদ ফোক্বাহায়ে কেরাম ফিকহ শাস্ত্রের কিতাবগুলোতে রোজার প্রকারভেদ বর্ণনা করেছেন। তারা ফিক্বহশাস্ত্রের কিতাবগুলোয় রোজাকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করেছেন। ফরজ রোজা ও নফল রোজা। [মুখতাসারুল কুদুরী]
নামাজ, জাকাত প্রভৃতি ইবাদত ফিরশতা, জিনসহ অন্যান্য মাখলুকাত সম্পন্ন করে থাকে। কিন্তু রোজা একমাত্র মানবজাতির জন্য স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও ইবাদত; যা অন্যদের দেয়া হয়নি। আল্লাহর প্রিয় বান্দা বান্দানিরা এ পবিত্র রমজান মাসে সারা দিনব্যাপী অনাহারে থেকে আল্লাহর ইবাদত করে থাকেন। এ রমজান মাসে রাতে তারাবিহ নামাজ আদায় করে থাকেন মুসলিম নর-নারীরা এবং বেশিরভাগ মসজিদে তারাবিহ নামাজে পবিত্র কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করে কোরআন খতম দিয়ে থাকেন। এ পবিত্র মাসে সিয়াম পালনের দ্বারা আল্লাহর দিদার লাভে যোগ্য বলে গণ্য হয়। ইখলাস একনিষ্ঠতার সঙ্গে ঈমানদাররা আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে। অনেকেই পবিত্র রমজান মাসে ইতিকাফের নিয়ত করে থাকে। কেউ কেউ রমজানের শেষের ১০ দিন ইতিকাফ করেন। এ মাসে রয়েছে শবেকদর। এ পবিত্র মাস কোরআন নাজিলের মাস। এ মাসে শবেকদরের রাত্রে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর পবিত্র কোরআন নাজিল হয়।
রমজানের রোজার ফজিলত: রোজার ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনÑহে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপরও ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা খোদাভীরু তথা তাকওয়াবান হতে পারো। [স–রা বাকারাহ, আয়াত ১৮৩]
শান্তি, অফুরন্ত রহমত, বরকত ও ফজিলতে পরিপূর্ণ এই রমজান মাস। এ রমজান মাসের রোজা রাখার ফজিলত অনেক। পবিত্র কোরআনের স–রা বাকারার অন্য আয়াতে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে যেই রমজান মাসে উপস্থিত থাকে, অর্থাৎ যে রমজান মাস পায়, তাকেই রোজা পালন করা আবশ্যক। কারণ এতে অশেষ কল্যাণ ও সমৃদ্ধি নিহিত রয়েছে। [সুরা বাকারাহ আয়াত: ১৮৬]
পবিত্র রমজানের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের পাশাপাশি বিভিন্ন হাদিসের কিতাবগুলোতে অনেক হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেনÑ যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে রমজানের রোজা রাখে, তার অতীত জীবনের যাবতীয় গুনাহগ–লো ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে রমজানে ইবাদত করে, তার অতীতের পাপগ–লো ক্ষমা করে দেয়া হবে। [এই হাদিসটি বুখারি ও মুসলিম শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে।]
রমজানের রোজা পালন করার মাধ্যমে শয়তানি ধোঁকা ও কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পায়। তাই এ পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর বান্দা-বান্দানিরা মহান রবের ইবাদতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে। ইবাদত করার মাধ্যমে খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা যায়। অন্য হাদিসে পাক এ এসেছে; হজরত আব– হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেনÑ যখন রমজান মাস আগমন করে, আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের বন্দি করা হয়। অন্য এক বর্ণনা মতে,  রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। [এই হাদিসটি বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে] আরও একটি হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনÑ এটি এমন মাস যার প্রথমাংশ  রহমত বা দয়া, মধ্যম অংশ মাগফিরাত তথা ক্ষমা এবং শেষাংশ নাজাত বা দোজখ থেকে মুক্তি দানের জন্য নির্ধারিত। এ মাস পাপ পরিহার করার এবং সৎকাজে নিজেকে নিয়োগ করার মাস। [বায়হাকি ও মিশকাত]
এ পবিত্র মাসের রোজা যুগ যুগ ধরে রোজা রাখার চেয়ে উত্তম। সারা বছরব্যাপী রোজা রাখলেও পবিত্র রমজান মাসের একটি রোজার সমান হবে না। রমজানের রোজার গুরুত্ব অনেক। হাদিস শরিফে ইরশাদ হচ্ছেÑহজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেনÑ কোনো শরয়ী অনুমোদন ছাড়া বা কোনো রোগ ব্যাধি ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি পবিত্র রমজান মাসের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তাহলে এর কাজা হবে না যদিও সে যুগ যুগ ধরে রোজা রাখে। [মিশকাত] অন্যত্র মহান রাব্বুল আলামিন হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ করেন- রোজা আমার জন্য, আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। [বুখারি ও মুসলিম]
সাহরি ও ইফতারের ফজিলত: হজরত আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে করিম সা. ইরশাদ করেছেনÑ তোমরা সাহরি আহার করো। কেননা, সাহরি আহারের মধ্যে বরকত রয়েছে। [এই হাদিসটি বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে]
অন্য একটি হাদিসে সাইয়্যেদুনা হজরত সালমান ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাস–লে করিম সা. ইরশাদ করেনÑ যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ইফতার করার ইচ্ছা করে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। কেননা, খেজুর বরকতময়। আর যদি খেজুর না পায় তবে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি পবিত্র করে। [মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী শরিফ, আব– দাউদ ও ইবনে মাজাহ শরিফ]
রমজানে করণীয়:
১. পবিত্র রমজানে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা।
২. সময়মতো ফরজ ইবাদত করা এবং বেশি বেশি নফল ইবাদত করা।
৩. রোজা অবস্থায় খারাপ কথা, মিথ্যা কথা, পরনিন্দা, গিবত, কারও অন্তরে কষ্ট না দেয়া, জুলুম করা, নাচ ও গান না দেখা ইত্যাদি কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা। এ গুলো দ্বারা সওয়াব কমে যায়।
৪. প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের খোঁজ খবর নেয়া।
৫. ভোর রাতে সাহরি খাওয়া। হাদিস শরিফে আছে তোমরা সাহরি খাও। এতে বরকত রয়েছে। [বুখারি ও মুসলিম]
৬. ইফতারের সময় ইফতার সামনে রেখে দোয়া দরুদ পড়া। হাদিসে আছে, ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। [আবু দাউদ]
৭. রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা।
পবিত্র রমজানে মহান রাব্বুল আলামিন বেহেশতের দরজা খুলে দেন এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে রাখেন। শয়তানকে বন্দি করে রাখেন। কবরের আজাব দেন না এ পবিত্র মাসে। রমজান মাসে সওয়াল জওয়াব করা হয় না। রমজানুল মোবারকে মহান রাব্বুল আলামিন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর ওপর কুরআনুল কারিম নাজিল করেন। এ পবিত্র মাস রমজানের ফজিলত ও মর্যাদা অত্যধিক। এ পবিত্র মাসে ইবাদত বন্দেগি করে সবাই যেন কাটাতে পারে সে তওফিক দান করুক। আল্লাহ পাক আমাদের রমজান মাসের বরকত ও ফয়ুজাত দানে ধন্য করুক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট