1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে

  • প্রকাশিত: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

বিভিন্ন খালে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি : পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে চলছে পরিবেশ বিধ্বংসী বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার। এতে বনের গহীনে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও মাছের পোনা প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে। আর জেলে নামক এক শ্রেণীর দূর্বৃত্তদের এ কাজে সহযোগীতা করছেন বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী। ফলে বনের জীব বৈচিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সুন্দবনের ৩১ শতাংশ জায়গা জুড়ে রয়েছে জলাভূমি। বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে মৎস্য সম্পদ। জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে ৪৫০টি নদ-নদী। আর এই নদ-নদীতে রয়েছে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ। এর মধ্যে ২৬ প্রজাতির চিংড়ি, ১৩ প্রজাতির কাঁকড়াসহ অসংখ্য জলজ প্রানী। সরকার প্রতি বৎসর এই মৎস্য সম্পদ থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় করে থাকেন। কিন্তু কিছু জেলে নামক দূর্বৃত্তরা কম পরিশ্রমে অধিক মুনাফার আশায় বৈধভাবে পাশ পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন। আর বনের অভ্যন্তরে প্রতিটি খালে ও নদীতে পরিবেশ বিধ্বংসী বিষ প্রয়োগে করছেন মাছ শিকার। এমনকি মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত নিষিদ্ধ খালেও। আর তাদের এ কাজে প্রতিরোধ না করে আর্থিক চুক্তিতে সহযোগীতা করছেন বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। আর বন সংলগ্ন এলাকার ওই দূর্বৃত্তদের সঙ্গে কথিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর গভীর সখ্যতা এবং সহায়তার ফলে আগামীতে মাছের প্রজনন মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হতে পারে। জানা গেছে মধ্য ভাটার সময় খালের গোড়ায় জাল পেতে খালের আগায় বিষ দেওয়া হয়। কিছুক্ষনের মধ্যে মাছগুলো ছটফট করতে করতে দূর্বল হয়ে ভাসতে ভাসতে জালে এসে আটকা পড়ে। এ কাজে সাধারণত ভারতীয় অবৈধ রিপকট, ক্যারাটে, হিলডন, ওস্তাদ ও বিষ পাউডারসহ বিভিন্ন বিষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে একদিকে যেমন বনের গহীনে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে অন্যদিকে বিষ মিশ্রিত পানি পান করে বাঘ, হরিণসহ বনের নানা বন্য প্রানীও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। আবার ওই বিষ মিশ্রিত মাছ খেয়ে জনসাধারণ পেটের পীড়াসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযানে দুই একজন দূর্বৃত্ত বিষসহ হাতে নাতে আটক হলেও কখনো নেমে নেই এ কাজ। আর এতে মহা বিপাকে পড়েছেন বৈধ ভাবে মাছ শিকার করে এমন সব জেলেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি অমাবস্যা ও পূর্নিমার গোনে নৌকা প্রতি উৎকোচ নিয়ে এ কাজে সহযোগীতা করেন বনবিভাগের দূর্নীতিবাজ কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডাঃ সুদীপ বালা বলেন, বিষ মিশ্রিত মাছ খেলে সাধারণত মানুষের কিডনি, হার্ট ও লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ে কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে মারা যায়। বিষ মিশ্রিত পানি খেলে বিভিন্ন প্রাণীরও একই সমস্যা হতে পারে। তবে প্রাণীর ক্ষেত্রে দ্রুত প্রভাব পড়ে।
এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাম জানান, যে খালে বা জলাশয় বিষ প্রয়োগ করা হয় কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সেখানে কোন মাছ প্রবেশ করতে পারে না। আর এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ে ওই সব খালে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
এব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাস বলেন, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জেলের জাল ও নৌকা জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু কোন জেলেকে আটক করতে পারেনি। তা ছাড়া যে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রমান পেলে বিভাগিয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট