1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে সকলকে

  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

শ্যামনগর সাতক্ষীরা ‍ : জীবাশ্ব জ্বালানির দহন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর বায়ুম-লে গ্রীনহাউস গ্যাস যেমন- কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂), মিথেন (CH₄), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) এবং পফ্লোরিনেটেড গ্যাস নির্গত হয়। এগুলি-পৃথিবীর বায়ুম-লে গ্যাসীয় স্তর সৃষ্টি করে, যা সূর্যের আলোকে পৃথিবীতে প্রবাহিত হতে বাধাঁ দেয় এবং পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত তাপ আটকে রাখে। এই প্রক্রিয়াটি “গ্রীনহাউস প্রভাব” নামে পরিচিত এবং এর ফলস্বরূপ পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এটি পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী, যার ফলে আমরা ক্রমাগত তাপমাত্রার বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা, বনাঞ্চল ধ্বংস, জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি এবং জীবন ও জীবিকার উপর চরম নেতিবাচক প্রভাব আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্যপপপ্রপ্রপ্রপ করেছি, যা আমাদের এই বাসযোগ্য মাতৃভূমির জলবায়ুকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। আর এই অস্থিতিশীলতার খেসারত দিচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা, বিশেষ করে কৃষক ও শ্রমজীবী দরিদ্র জনগোষ্ঠি।বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল যেমন সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও ভোলা প্রায় প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততার বিস্তার এবং অতিবৃষ্টি/অনাবৃষ্টির মতো নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। এসব দুর্যোগের ফলে কৃষকরা ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হন। গবেষণা ও সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধুমাত্র ঘূর্ণিঝড় সিডর (২০০৭), আইলা (২০০৯), আম্পান (২০২০) ইয়াস (২০২১) এবং রিমাল (২০২৪) সময় উপকূলীয় এলাকায় কৃষিখাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। উদাহরণস্বরূপ, আইলার পর সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লক্ষ হেক্টর জমি লবণাক্ত হয়ে পড়ে, যার মধ্যে প্রায় ৭০% জমিতে ফসল উৎপাদন অসম্ভব হয়ে যায়। শুধু আম্পানের সময়েই কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে ১লাখ ৭৬হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এছাড়াও, মিঠা পানির ঘাটতি, ঘের ও পুকুর ধ্বংস হওয়ায় মাছচাষ ও পশুপালনেও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এইসব ক্ষয়ক্ষতি শুধু কৃষকের ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং খাদ্য নিরাপত্তা, স্থানান্তরিত জীবিকা এবং কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ওপরও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। তাই উপকূলীয় কৃষিকে টেকসই করতে আধুনিক লবণ সহিষ্ণু জাতের বিকাশ, দুর্যোগ পূর্বাভাস প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং কৃষকদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থায় প্যারামেট্রিক মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স হতে পারে এই কৃষি ক্ষতি পূরণের এক অনন্য মাধ্যম।প্যারামেট্রিক মাইক্রো-ইন্স্যুরেন্সের ধারণা মূলত এসেছে ঐতিহ্যবাহী ইন্স্যুরেন্স সেবার সীমাবদ্ধতা থেকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্ষুদ্র কৃষক বা নি¤œআয়ের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতির প্রমাণ দেখানো, দাবি অনুমোদনের দীর্ঘ প্রক্রিয়া, এবং ব্যায়বহুল প্রিমিয়ামের কারণে তারা প্রচলিত ইন্স্যুরেন্স সেবার বাইরে থাকেন। এর প্রেক্ষিতে, ২০০৫ সালে ম্যাক্সিকোতে, Munich Re এবং সরকারের যৌথ উদ্যোগে চালু হয় প্যারামেট্রিক বৃষ্টিভিত্তিক ইন্স্যুরেন্স, যা ছিল বিশ্বের প্রথম মাইক্রো পর্যায়ের প্যারামেট্রিক প্রকল্প। এরপর হন্ডুরাস, কেনিয়া, ভারত, এবং বাংলাদেশেও নানা প্রকল্প চালু হয়েছে। একই সালে আফ্রিকার একটি দেশে মালাউই (Malawi), যেখানে এটি কৃষকদের জন্য আবহাওয়া-ভিত্তিক বিমা হিসেবে শুরু হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের ফসলহানির ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া, বিশেষ করে খরা বা অতিবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে। যা ছিল কৃষকদের জন্য একটি প্যারামেট্রিক বৃষ্টিভিত্তিক ইন্স্যুরেন্স প্রকল্প। এতে বৃষ্টিপাত নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হতো, ক্ষয়-ক্ষতির প্রমাণ দেখানোর প্রয়োজন ছাড়াই। প্যারামেট্রিক ইন্স্যুরেন্স একটি “ইনডেক্স-বেসড” ইন্স্যুরেন্স, যেখানে ক্ষতির প্রমাণ লাগেনা, বরং নির্দিষ্ট পরিমাণের ডেটা (যেমন বৃষ্টি, তাপমাত্রা, ভূমিকম্পের মাত্রা, নদীর উচ্চতা) এর উপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। উদাহারণ হিসেবে উল্লেখ করাযেতে পারে যদি কোনো এলাকায় ৩০দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত ৫০ মিমির নিচে নেমে যায়, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এতে গ্রাহককে কোনো দাবিনামা জমা দিতে হবে না। সরকার বা থার্ড-পার্টি ডেটা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে এসব তথ্য যাচাই হবে। প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স সুবিধা হলো দ্রুত পেমেন্ট, কম প্রশাসনিক খরচ, স্বচ্ছতা ও ডেটাভিত্তিক নীতিমালা, দরিদ্র কৃষকদের জন্য সাশ্রয়ী ও কার্যকর। এক কথায় বলা যায়, প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স (Parametric Microinsurance) হলো একটি বীমা ব্যবস্থা, যেখানে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয় কোনো নির্দিষ্ট “পরিমাপযোগ্য সূচক” বা ইভেন্ট সংঘটিত হলে বাস্তব ক্ষতির মূল্যায়ন না করেই। একজন কৃষক ফসলের বীমা করেছেন, যদি বৃষ্টিপাত এক মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণের নিচে নেমে যায় (যা আগেই ঠিক করা হয়েছে), তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হবে, এমনকি মাঠে গিয়ে দেখা না হলেও।বাংলাদেশে প্যারামেট্রিক ইন্স্যুরেন্স এখনও খুব সীমিত পর্যায়ে রয়েছে, তবে কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বলা যেতে পারে ঙীভধস এবং ঝরিংং জব এর সহযোগিতায় প্যারামেট্রিক বন্যা ইন্স্যুরেন্স চালু করা হয় সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম এলাকায়। এখানে নদীর পানির উচ্চতা যদি নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। Green Delta Insurance ও World Bank এর সহায়তায় কিছু পাইলট প্রকল্প চালু হয় কৃষি খাতে। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে এটি ব্যাপকভাবে প্রয়োগযোগ্য। সূচকের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া তথা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, ভূমিকম্পের মাত্রা, নদীর পানি স্তর, বাতাসের গতি (ঘূর্ণিঝড়ের সময়), যেহেতু নির্দিষ্ট ইন্ডিকেটরের তথ্য পাবলিকভাবে পাওয়া যায় (যেমন আবহাওয়ার তথ্য), তাই মূল্যায়নের প্রক্রিয়ায় সময় লাগে না। কম খরচে কার্যকর তথা এটি মাইক্রোইন্স্যুরেন্স হওয়ায় নি¤œআয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য। এটি সাধারনত কৃষি খাতে (খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা), জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায়, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় এবং দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় খবই কার্যকরী। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে কোনো এলাকায় যদি এক মাসে বৃষ্টিপাত ৫০ মিমি’র নিচে নেমে যায়, তাহলে পলিসিধারী কৃষকদের ২০০০টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এটি আগে থেকেই ঠিক করা। এই ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির আশায় তারা এককালীন বা কিস্তিতে বছরে ১০০টাকা নন রিফান্ডেবল টাকা ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কাছে জমা দিবে।আরো সহজ করে বলা যায়, কৃষকেরা যখন বীজ বা সার কিনেন, তখন সাথে একটি ছোট ফি দিয়ে বীমাও নেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খরা বা অতিবৃষ্টি হয়, তাহলে অটোমেটিকভাবে ক্ষতিপূরণ মোবাইল মানির মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যার ডাটা পাপ্তির উৎস হবে স্থানীয়ভাবে বসানো আবহাওয়া স্টেশন। ফিলিপাইনের একটি উদাহারণ দেয়া যেতে পারে, লিফিপাইন হলো একটি টাইফুন কেন্দ্রিক দূর্যোগ প্রবন এলাকা, এখানে চযরষরঢ়ঢ়রহবং-Philippines-Typhoon Parametric Insurance নামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, সহযোগিতায় ছিলো ফিলিপিনো সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ADB, World Bank. লক্ষ্য ছিলো ঘূর্ণিঝড় হলে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবার বা স্থানীয় সরকার উক্ত কৃষক কমিউনিকে তাৎণিক সহায়তা দেওয়া। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণের সুচক ছিলো ঘূর্ণিঝড়ের গতি ও গতিপথ। সুচকের মাত্রা অতিক্রম করায় বীমাগ্রহিতাকে নির্ধারিতহার ক্ষতিপূরণ থার্ড পার্টি কর্তৃক সয়ক্রিয়ভাকে মোবইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে কৃষকের কাছে পৌছে যায়, সুপার টাইফুন ইয়োলান্ডা-এর পর এই ব্যবস্থার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। একইভাবে ইন্ডিয়াতে Weather-based Crop Insurance Scheme (WBCIS) নামে ইন্ডিয়ান সরকার কর্তৃক গৃহিত প্রকল্পের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ইত্যাদির ভিত্তিতে কৃষকেরা প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স ক্ষতিপূরণ পান। উদাহারণ হিসেবে আরও উল্লেখ করা যেতে পারে, ক্ষুদ্র কৃষকদের খরা বা অনাবৃষ্টির কারণে ফসলহানির ক্ষেত্রে দ্রুত সহায়তা এবং ভূমিকম্প, হারিকেন এবং বন্যা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্র ঈCaribbean Catastrophe Risk Insurance Facility (CCRIF) নামে একটি প্রকল্প চালু হয়, যেভানে সূচক হিসেবে ভূমিকম্পের রিখটার স্কেল, হারিকেনের বাতাসের গতি, বৃষ্টিপাতের মাত্রা ইত্যাদি উপর নির্ভর করে দেশগুলো কৃষকদের নিজে নামে অল্প টাকায় বীমা কিনে রাখে বড় দুর্যোগ ঘটলে সরকারকে তাৎক্ষণিক অর্থ পায়। পাশাপাশি আফ্রিকার অনেক দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও খরার মতো দুর্যোগে দ্রুত সহায়তা, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খরার সূচক বিশ্লেষণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এইসব উদ্যোগ মূলত দ্রুত, স্বয়ংক্রিয় এবং কম খরচে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই চালু করা হয়েছে, বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায়।একই ভাবে আমাদের দেশেও Green Delta Insurance, Oxfam and RIMES (Regional Integrated Multi-Hayard Early Warning System) – Weather Index Insurance (WII) এর আওতায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে ক্ষুদ্র কৃষক (ধান ও ভুট্টা চাষী) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি বা অতিবৃষ্টি তাপমাত্রার চরম ওঠানামা পূর্ব নির্ধারিত সূচকের ভিত্তিতে কৃষকেরা কম মূল্যে প্রিমিয়াম দিয়ে বীমা নিতে পারেন। আবহাওয়া ডেটা অনুযায়ী যদি কোনো পূর্বনির্ধারিত থ্রেশহোল্ড ভেঙে যায়, তবে মোবাইল মানির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দেওয়া হয়। উল্লেখ করা যায় যে, CARE Bangladesh–Flood Index Insurance Pilot প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী ও রৌমারী উপজেলা ২০১৯-২০২০ সালে ঙীভধস, Oxfam, Swiss Re Foundation নদীর পানি স্তর নির্দিষ্ট উচ্চতা অতিক্রম করলে স্বয়ংক্রিয় ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রায় ৫০০ পরিবার পরিবারপ্রতি ৩৫০০টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (BWDB) ও স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ মাধ্যেমে ডাটা সংগ্রহ করেছে। CARE Bangladesh–Cyclone Index Insurance সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলীয় এলাকা ২০২০-২০২১ সালে Pragati Insurance, InsuResilience Solutions Fund ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে ক্ষতিপূরণ প্রদান, উপকারভোগী ছিলো প্রায় ৩০০ পরিবার, ক্ষতিপূরণ পেয়েছে পরিবার প্রতি ২০০০-৪০০০ টাকা, ডেটা উৎস হিসেবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্যাটেলাইট ডেটাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ক্ষতি গ্রহস্তদের কোন প্রকার এভিজেন্স দাখিল করতে হয়নি। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য দ্রুত ও স্বয়ংক্রিয় ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করেছে, যা তাদের জীবিকা রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে সহায়ক হয়েছে। এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশের প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একইভাবে গাইবান্ধা ও জামালপুর অঞ্চলে Swiss Re Foundation Gi সহায়তায় SKS Foundation–Parametric Flood Insurance চরাঞ্চলের বন্যাপ্রবণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নদীর পানি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যাটেলাইট এবং হাইড্রোলজিকাল ডেটার ভিত্তিতে কোনো সার্ভে ছাড়াই ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি।প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স কিছু অন্তরায়ও রয়েছে যথা সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ডেটার অভাব তথা অনেক উন্নয়নশীল বা গ্রামীণ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত, নদীর উচ্চতা, ভূকম্পন ইত্যাদি সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ও দীর্ঘমেয়াদি ডেটা পাওয়া যায় না। স্যাটেলাইট ডেটাও অনেক সময় সঠিক স্থানিক রেজুলিউশন দিতে পারে না। প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা: অটোমেটেড ওয়েদার স্টেশন স্থাপন ব্যয়বহুল। প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর অভাব বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। । পুনঃবীমা (Reinsurance) জটিলতা রয়েছে বড় ঝুঁকি মোকাবেলায় পুনঃবীমা অপরিহার্য, কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান আগ্রহী হয় না। সামাজিক ও মানসিক বাধা এবং অজ্ঞতার কারণে অনেক গ্রামীণ মানুষ জানেই না প্যারামেট্রিক ইন্স্যুরেন্স কী। তারা ক্ষতির পর প্রমাণ ছাড়াই টাকা পারে এটা তারা বিশ্বাস করতে চায় না। ইনডেক্স বা ট্রিগার কীভাবে কাজ করে, সেটা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়। প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতিগত সমস্যাতো রয়েছেই, এখানো আমাদের দেশে স্পষ্ট নীতিমালার অভাব তথা আমাদের দেশে প্যারামেট্রিক ইন্স্যুরেন্সকে আইনি বা নীতিগতভাবে “ইন্স্যুরেন্স” হিসেবে গণ্য করা হয়নি। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলো (যেমন বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) প্রয়োজনীয় গাইডলাইন বা রেগুলেশন তৈরি করেনি। লাভজনক না হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান মাইক্রো লেভেলে আসতে চায় না। এছাড়াও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ রযেছে প্রিমিয়াম নির্ধারণে সমস্যা রয়েছে ইনডেক্স ভিত্তিক রিস্ক মডেলিং করা জটিল এবং খরচসাপেক্ষ। প্রিমিয়াম অনেক ক্ষেত্রেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাগালের বাইরে হয়ে যায়, যদি না সাবসিডি থাকে। তাই উপকুলীয় অঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য কার্বন নিঃসররণকারী দেশ সমূহের প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা গৃহিতপূর্বকি প্রান্তিক কৃষকের জন্য প্যারামেট্রিক মাইক্রোইন্স্যুরেন্স চালু করা জন্য সরকারের উদ্যেগের বিকল্প নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট