1. news@sangjogprotidin.online : ADMIN : ADMIN ADMIN
  2. info@www.sangjogprotidin.online : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "সংযোগ প্রতিদিন" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

শ্যামনগরে ইটভাটায় পড়ছে কাঠ: প্রশাসন নিরব কেন?

  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

শ্যামনগর সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় অধিকাংশ ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে প্লাস্টিক , সোয়াবিনের গাথ ও টায়ার। তার পাশাপাশি থাকছে দেশীয় কাঠ। অধিকাংশ ইটভাটা জনবসতি এলাকায় হওয়ায় এর বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। নুরনগর ইউনিয়নের রামজীবনপুর এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনেই একটি ইটভাটা রয়েছে তার কালো ধোয়া প্রতিনিয়ত আমাদেরকে বিষাক্ত করে তুলেছে, আমাদের অনেক বন্ধুরা ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এদিকে অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও রয়েছে নীরব। তবে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপস্থাপনের মাধ্যমে মামলা দেয়া এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছিলেন ‌উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনি খাতুন। কিন্তু বর্তমান উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না সে কারণে শ্যামনগর উপজেলার জনমনে মারাত্মক ক্ষোভ‍‍।‌দেখা দিয়েছে। এই প্রতিবেদন ‌লেখার সময় শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুন মহোদয়ের কাছে একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন দেওয়া হয় কিন্তু উনি ফোন রিসিভ না করে প্রত্যাখ্যান করেন পরে উনি একটি মেসেজ লিখে বলেন কি জানতে চাচ্ছেন মেসেজ দিন, পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি মোবাইল ফোনে মেসেজ দেওয়া হয় শ্যামনগরে ইটভাটায় পড়ছে ‌কাঠ প্রশাসন নিরব কেন আপনার বক্তব্য জানতে চাই এর ‌প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুন তার কোন বক্তব্য এই প্রতিবেদককে জানাননি, প্রশাসনের দৌড় ঝাপে ইতিমধ্যে দুই একটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হলেও বর্তমানে রয়েছে সবাই বহাল তবিয়াতে। এদিকে একটি ভাটার ম্যানেজার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি এই প্রতিবেদককে ‌জানান শ্যামনগরে ১৪ টি ‌ভাটা বর্তমান নিয়ন্ত্রণ করছে সবকিছু বকুল, তিনি আরো জানান সে কারণে বকুলের হাত দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন সহ সাব উদ্যতন মহলকে ‌ম্যানেজ করা হচ্ছে, তারপরে কাঠ ‌দিয়ে ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইটভাটা মালিক বকুলের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি কোন ফোন রিসিভ করেননি,, শ্যামনগরে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর বিষয়টা নিয়ে পরিবেশবিদ এবং সুধী ‌মহলের মধ্য একরকম গুজন ‌তৈরি হয়েছে সুধী ‌মহল বলতে চাই প্রশাসন যদি এর সাথে সম্পৃক্ততা ‌‍না থাকে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষ ‌যদি জড়িত না থাকে তাহলে ইটভাটা মালিকরা পরিবেশ দূষণ করে কাঠ ‌দিয়ে ইট পরিয়ে‌‌এলাকায় এত বড় ক্ষতি করছে কেন,,
উপজেলার জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই গড়ে উঠেছে এ সকল অবৈধ ইটভাটা। এ প্রসঙ্গে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালক ডাঃ জিয়াউর রহমান বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্লাস্টিক ও টায়ার দিয়ে ইট পোড়ানো হলে এর বিষাক্ত ধোঁয়ায় ব্রঙ্কাইটিস, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। এতে বৃদ্ধ এবং শিশুদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে শ্যামনগর উপজেলায় রয়েছে ১৪টি ইটভাটা। এরমধ্যে ঝিকঝাক এবং সনাতনী পদ্ধতির ভাটাও রয়েছে। এসব ভাটার মধ্যে অধিকাংশের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। পরিবেশের ছাড়পত্রবিহীন এসব অবৈধ ইটভাটার কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্সও নেই। শুধুমাত্র উচ্চ আদালতে একটি রিটের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর অবৈধভাবে চলছে এসব ইটভাটা। এ কারণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না পরিবেশ অধিদপ্তর।
সরজমিন দেখা যায়, প্রতিটি ইটভাটার সামনে কয়লা রাখা থাকলেও রাতে জ্বালানো হয় কাঠ, প্লাস্টিক সয়াবিনের গাঁথ ও টায়ার। জ্বালানি কাজে কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান, সংশ্লিষ্ট ভাটা মালিকের নির্দেশে দিনে অল্প কয়লা ও সারারাত শুধু , প্লাস্টিক, সয়াবিনের গাঁথ, তুষকাঠ ও টায়ার ব্যবহার করে তারা ইট পোড়াচ্ছেন। একটি ব্রিকসের ম্যানেজার জানান, প্রথমে ভাটায় নতুন আগুন জ্বালানোর সময় ভাটার ভেতরে অল্প কিছু কাঠ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় প্লাস্টিক, তুষকাঠ ব্যবহার করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ভাটায় কাঠ ব্যবহার করলে প্রতিটি ইটে খরচ কিছুটা কম হয়। একাধিক কৃষক বলেন, অবাধে কাঠ পোড়ানোয় একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বন অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। এ ছাড়া ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে কমছে জমির উর্বরাশক্তি। প্রতিদিন শত শত ট্রাক মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে। ফসলি জমির উপরের অংশ কেটে ফেলে মাটি ভাটায় আনা হচ্ছে। এ কারণে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ধোঁয়া ও বালুকণার কারণে গাছপালা ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে২০১৩ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ৫৯ নং আইনে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় ২০ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত এবং পরবর্তীতে অধ্যাদেশ নং ০২/২০১৮ দ্বারা সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, কৃষি জমি, এমন কোন জমি যাহা বৎসরে একাধিকবার কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি,
সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার উপজেলা সদর, আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না৷ এমনকি
ছাড়পত্র অর্থাৎ এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন বা তদাধীন প্রণীত কোন বিধির অধীন ইস্যুকৃত কোন ছাড়পত্র আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যেখানে অবস্থিত সেখানের জেলা প্রশাসকের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করিতে পারিবে না৷
কতিপয় স্থানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধকরণ আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন! এই আইন কার্যকর হইবার পর নিম্নবর্ণিত এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি কোন ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না৷ এমন আইন কার্যক্রমে শ্যামনগরে সকল ভাটাই অবৈধ! এরপরও মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ ৷

২০২২ সালে বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম এবং বিচারপতি সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না।
জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এই মর্মে গত ১৩ নভেম্বর এইচআরপিবি হাইকোর্টে রিট করেন।
অবৈধ ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট।
তবে এখনো পযর্ন্ত শ্যামনগর উপজেলায় কোন প্রকার অভিযান দিতে দেখা যায়নি উপজেলা প্রশাসনের।

জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ এমন বিধান থাকলেও শ্যামনগর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না এবং জ্বালানি হিসেবেও ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষেধের বিধানও রয়েছে।
কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় ইট ভাটার মালিকেরা জ্বালানি হিসাবে কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করছে কাঠ যা আইনে নিষিদ্ধ ৷

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সংযোগ প্রতিদিন
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট