স্টাফ রিপোর্টারঃ 

ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের ভবনা গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভবনা দক্ষিণ যুব ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক দ্বীনি শিক্ষা সফর সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল আটটায় ভবনা দক্ষিণ যুব ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের স্বেচ্ছাসেবী সদস্যবৃন্দ, শুভাকাঙ্ক্ষী, হিতাকাঙ্ক্ষীসহ এলাকার বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে শাহজাহান দোকানের মোড় হতে দ্বীনি শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য রওনা হয়ে সকাল এগারোটায় পিরোজপুর আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনে পৌছায়। এসময় তারা সকলে বিশ্বনন্দিত মুফাচ্ছিরে কুরআন মরহুম আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী (রহঃ) এর কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারত শেষে পরিষদের সভাপতি শিক্ষক ও সাংবাদিক মাওঃ মুহাঃ ফজলুর রহমান বলেন ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের দাওয়াতে বিগত অর্ধশতাব্দী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী যে অবদান রেখে গেছেন সেটা ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। আল্লামা সাঈদী ছিলেন দ্বীনের নির্মূল এক খাদেম ও দ্বায়ী ইলাল্লাহ। কোরআনের তাফসীরে তাঁর দরদী ভাষা ও মাধুর্যতা মানুষকে শুধু আকৃষ্টই করে নাই, দ্বীনের আলোপৌঁছে গেছে অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনে। আল্লামা সাঈদীর জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও কোরআনকে মানুষের অন্তরে প্রাণবন্ত ভাষায় রেখেগেছেন শতশত বছরের জন্য।

তিনি আরো বলেন, আল্লামা সাঈদী দেশে-বিদেশে কোরআনের বাণী প্রচার করে বেড়াতেন। অনেক অমুসলিম তার তাফসির শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি প্রায় ৫০টিরও অধিক দেশে সফর করেছেন। আল্লামা সাঈদী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। অথচ তার তাফসির শুনে মনে হয় আমাদের মাঝে তিনি এখনো আছেন। আল্লামা সাঈদীর একান্ত ইচ্ছা ছিল আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করা। আসুন আমরা তার সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করি। আর শিরক বিদআতের ব্যাপারে আল্লামা সাঈদী জনগণকে সচেতন করতেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করতেন না। তার মত সাহসী ভূমিকা পালন করে সমাজে দ্বীন কায়েমে যাথার্থ ভূমিকা পালন করতে হবে। আসুন আমরা আল্লাহর কোরআনের বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। আমরা যদি সাহসের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন কোরআনের রাজ কায়েম হবে, মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা জয়নুল আবেদিন বলেন আল্লামা সাঈদী শুধু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বা বাংলাদেশের সম্পদ নয়, বরং তিনি ছিলেন গোটা বিশ্বের, উম্মাহর সম্পদ।

বিশিষ্ট কলামিস্ট,মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফাসসির মাওঃ খাইরুল ইসলাম নোমানী বলেন আল্লামা সাঈদীর আলোচনা শুনে বহু মদখোর মদ ছেড়েছে, যেনা ব্যাভিচার ছেড়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছেড়েছে, সঠিক পথের দিশা পেয়েছে, ধরেছে ইসলামী পথ, বেছে নিয়েছে ইসলামী জীবন-বিধান। পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান হয়েছে বাধ্যগত। আধুনিক, বিজ্ঞান মনস্ক তরুণ-যুবক, নাস্তিকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আপন মনে আনমনে মেনে নিয়েছেনা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব, চলেছেন ইসলামী বিধানমতে, নিজের জীবনে হালাল-হারামের বিধিবিধানকে বাস্তবায়িত করেছেন। দ্বীনি শিক্ষা সফরে পরিষদের সহ-সভাপতি মোঃ জয়নাল শেখ, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ মুস্তাকিম শেখ, মোঃ শাহীন ফেরদাউস শেখ, মুজাহিদ শেখ ,কুতুব উদ্দিনসহ স্বেচ্ছাসেবী সদস্যবৃন্দ ও এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করে।

সফরে যাওয়ার পথে টাউন নওয়াপাড়া মোড়ে ভবনা দক্ষিণ পাড়া যুব ও সমাজকল্যাণ পরিষদের সফরকারীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময় করেন বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী ফকিরহাট উপজেলা শাখার সেক্রেটারি জনাব আবুল আলা মাসুম। তিনি বলেন আমরা যারা আল্লামা সাঈদী কে ভালবাসি, সেই ভালোবাসার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে তিনি যা চেয়েছিলেন, তিনি যা ভালবাসতেন, কুরআন সুন্নাহর আলোকে সেটাকে আমাদের ভালবাসতে হবে। তার গোটা জীবনের যে উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করা, সেই উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার জন্য ইসলামী আন্দোলনে শরীক হয়ে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।