তালা প্রতিনিধি : সুইসাইডাল নোট লিখে আত্মহত্যায় জীবন শেষ করে দিলেন আরও এক মেধাবী ছাত্রী পুষ্প রাণী দাস। অবশ্য হত্যার অভিযোগে পারিবারিক আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার ভাটারা থানা পুষ্পের স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে বলে নিহতের মামা জানিয়েছেন। পুষ্প রাণী তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের শুকলাল দাসের কন্যা।
মনোহরপুর গ্রামের শুকলাল দাসের তিন সন্তানের বড় সন্তান এই মেধাবী মেয়েটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পড়াশুনা শেষ করেছিল। পড়াশুনাকালিন দরিদ্র বাবার অসহায়ত্বের কারণে খুলনায় টিউশনী করে আর কলেজ শিক্ষক মামার সহযোগিতায় পড়াশুনা শেষ হয় তার। পার্টটাইম রুপান্তরে কাজ, ফুলটাইম দলিত এনজিওতে কাজ করেছেন তিনি। বার কাউন্সিলের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন পুষ্প।
এত কিছুর মধ্যে ঘটে যায় অন্য একটা ঘটনা। যা তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের এক মুসলিম শিক্ষার্থীর সাথে বিয়ে হয় তার। ছেলেটির বাড়ি লালমনিরহাট জেলায়। পরিবারের সাথে অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে দলিতের চাকুরি ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান নেয় দুজন। সেটা প্রায় আড়াই মাসের মত সময়। হঠাৎ গত ১৪ জুন (শনিবার) দিবাগত রাতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় এই মেধাবী মেয়েটি। ১৫ জুন (রবিবার) পুষ্পের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের একটি শ্মশানে। তার আগে ঢাকায় তার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পুষ্প রাণীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সরকারি স্কুলের শিক্ষক গাজী মোমিন উদ্দীন বলেন, এরকম বিদায় কখনও কাম্য নয়। দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করে আইনের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করে যখন সুখের জীবন হওয়ার কথা তখন এভাবে চলে যাওয়া কোন পিতামাতার জন্য সহ্য করা ভীষণ কঠিন।