ডেস্ক রিপোর্ট : প্রকৃতিতে এবার আগাম বৃষ্টি আধিপত্য বিস্তার করেছে। পহেলা জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়া অফিস বর্ষাকাল হিসেবে নির্ধারণ করলেও গত ৩০ মে খুলনায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে বুধবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ১শ’১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা অতি ভারী বর্ষণ। আগাম এই বৃষ্টিপাতে এ অঞ্চলের ধান চাষীদের জন্য আপাতত সুখবর বয়ে আনলেও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে নিম্নঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। সেখানকার কৃষকেরা ক্ষতির সম্মূখীন হবেন বলে কৃষি অফিস কর্তৃপক্ষ শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।
মৌসুমী বায়ুর প্রভাব সক্রিয় থাকায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। থেমে-থেমে বৃষ্টি ঝরছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অতি: ভারী বর্ষণ পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। আকাশে মেঘের খুব বেশি তর্জন-গর্জন শোনা যাচ্ছিল না, নিরবেই মাঝে-মধ্যে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে অথবা আলোক স্বল্পতার সৃষ্টি হচ্ছে, ঝপ-ঝপিয়ে বৃষ্টি নামছে। আবার ঝিরি-ঝিরি বর্ষণও হচ্ছে। খুলনা আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষের তথ্য এবং বিরাজমান পরিস্থিতি এমন চিত্রই প্রকাশ করছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবীদ মোঃ মিজানুর রহমান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, গত ১৬ জুন ৯ মিলিমিটার এবং ১৭ জুন থেকে ১৮ জুন সকাল ৬ টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যার ধরণ ছিল হালকা থেকে মাঝারি এবং অতি ভারী মানের। আগামী দু’-তিন দিন মেঘ-বৃষ্টি পরিস্থিতি বলবৎ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত। এরপর আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে গরমকালের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
এদিকে, খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে- এখন আউশ মৌসুম চলছে। আমন মৌসুম শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে আমন আবাদের লক্ষে জমিতে ট্রাকটর নামানো হয়েছে। এখানকার মটি ভারী মানের এটেল। বৃষ্টি বেশি পরিস্থিতিতে চাষীদের কাদা তৈরির কাজ সহজ হবে। এছাড়া দক্ষিণের কয়েকটি উপজেলায় মাটি থেকে লবন বর্ষার পানির সাথে মিশে জমি থেকে নিষ্কাশন হবে।
খুলনার নয় উপজেলাসহ মেট্রো অঞ্চলের দুই থানা এলাকায় আউশের তুলনায় আমন আবাদ হয় অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি জমিতে। ৯ উপজেলা এবং শহরের লবনচরা থানা এলাকায় মাত্র ৫ হাজার দুইশ’ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। নগরীর দৌলতপুর থানা এলাকায় এ ধানের আবাদ হয়নি। সবচে বেশি হয়েছে তেরখাদা উপজেলায়, ৪ হাজার ৩শ’ ১৫ হেক্টর জমিতে। অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষ ৯৩ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধান ফসলের জন্য অনুকূলে। তবে, ডুমুুিরয়া ও ফুলতলা উপজেলার বিল ডাকাতিয়ার সাথে ভবদহ নদীর সম্পর্ক রয়েছে। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ নদী পলি পড়ে গভীরতা হারিয়েছে। অতি মাত্র্য়া বর্ষণ হলে নদী সংযুক্ত এবং নিম্নাঞ্চলের জমিতে জলাবদ্ধতার শঙ্কা রয়েছে। এতে ফসলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।