ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে মৌসুমি বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের ঘটনায় অন্তত ৩৩ জন নিহত এবং আরও অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তীব্র ঝড়-বৃষ্টির সময় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রাজ্যটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের অনেকেই ছিলেন কৃষক ও দিনমজুর যারা খোলা আকাশের নিচে কাজ করছিলেন। আগামী দিনগুলোতেও রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
বিহার রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বিজয় কুমার মণ্ডল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, দুর্যোগপ্রবণ জেলাগুলোর প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে এবং বজ্রপাতের সময় কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, সে বিষয়ে প্রচার চালায়। সরকার মৃতদের পরিবার প্রতি ৪০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষা মৌসুম চলে। এই সময় একদিকে যেমন প্রচণ্ড গরমের পর স্বস্তি পাওয়া যায় এবং পানির উৎসগুলো পুনরায় ভরে ওঠে, অন্যদিকে বর্ষার সঙ্গে আসে মৃত্যু ও ধ্বংসের মিছিল।
বিশেষ করে বিহারসহ ভারতের পূর্বাঞ্চল প্রতি বছর বর্ষাকালে বন্যা ও বজ্রপাতের কারণে প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়ে। এতে শত শত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন, আর অনেকেই প্রাণ হারান।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে বর্ষার সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
চলতি বছরের মে মাসে মুম্বাইয়ে বর্ষা শুরু হয় প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে আগাম বর্ষা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।
এদিকে জুনের শুরুর দিকে উত্তর-পূর্ব ভারতে টানা বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হন এবং বাংলাদেশের চারজন প্রাণ হারান।
বিহার সরকার জানায়, ২০২৪ সালে বজ্রপাতে ২৪৩ জন এবং ২০২৩ সালে ২৭৫ জন নিহত হয়েছিলেন। সতর্কতা ও সচেতনতা এখন সময়ের দাবি।